এই পৃথিৱীতর বসবাসকারী প্রতিটি প্রাণী মানে সে মানুষ হোক বা কোনো জন্তু-জানোয়ার প্রত্যেকেই জন্মের পর বয়স বৃদ্ধির সাথে ধীরে ধীরে যখন বৃদ্ধ বয়সে প্রবেশ করে তখন চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পরে, শরীরের শক্তি ক্ষয় হয়, বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করে ও ধীরে ধীরে সেই মানুষ বা প্রাণীর মৃত্যু ঘটে থাকে।
মানুষের ক্ষেত্রে বয়স বাড়লে কোলজন প্রোটিনের মাত্র কমতে থাকে যার ফলে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের দেহে দ্রুত পরিমাণে কোলাজেনের মাত্রা কমতে থাকে। তবে বিশ্বে এমন কিছু প্রাণী রয়েছে যাদের বয়স বৃদ্ধি পেলেও তার খুব ধীর গতিতে বৃদ্ধ হয়।
অর্থাৎ তারা অনেক বছর বয়স পর্যন্ত জোয়ান থাকে। যার ফলে আয়ুও বৃদ্ধি পায় এই পরিণীগুলির অনেকদিন পর্যন্ত। যেমন-কচ্ছপ (Tortoise), স্যালামান্ডার, কুমির (Crocodile) ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙের (Frog) প্রজাতির রয়েছে যারা অনেক ধীরে ধীরে বৃদ্ধ হয় যার ফলে তাদের আয়ু (increase Life line) অনেক বেশি হয়।
বিজ্ঞানীরা এই সব প্রাণীদের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর জানিয়েছে যে অনেকটা সময় নিয়ে বেড়ে ওঠা তাদের প্রতিরক্ষামূলক (protective phenotype) বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম। অর্থাৎ কচ্ছপের শরীরে থাকা খোলোসের কারণে বা ব্যাঙের শরীরে থাকা বিষে কারণে তাদের কোনো প্রাণী সহজে করতে পারে না। এর ফলে বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফলে তাদের বৃদ্ধ হতে সময় লাগে ও আয়ু বৃদ্ধি পায়।
বিজ্ঞানীদের মতে এই খোলোস বা বিষ এই ধরণের প্রাণীদের জন্য তাদের ঢাল হিসাবে কাজ করে। বিজ্ঞানীদের ভাষায় একে ‘প্রোটেক্টিভ ফেনোটাইপ’ (protective phenotype) তত্ত্ব বলা হয়। এছাড়া পৃথিবীতে এমন বহু সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণী রয়েছে যারা এইসব কারণেই প্রায় ১০০ বছরের বেশি বেঁচে থাকে।
তবে এত দিন ধরে এই প্রাণীগুলির বেঁচে থাকার আসল কারণ কী তা এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা জানতে পারেননি। বিজ্ঞানীদের (Scientist) ধারণা, শুধু প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্যের জন্যেই নয় বরং অন্য কোনো কারণ রয়েছে যার কারণে এই প্রাণীরা সহজে বৃদ্ধ হয় না ও বহু বছর বেঁচে থাকতে পারে। এছাড়া বিজ্ঞানীরা (Scientist) এটাও মনে করেন যে এই সকল প্রজাতির জিনগত উপাদান পরীক্ষা করলে হয়তো কোনো নতুন তথ্য সামনে আসতে পারে। আর পরবর্তী কালে এর প্রয়োগ যদি মানবদেহের উপরেও করা যায় তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তা আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে।