এক সময় অভাবের কারণে শুরু করেছিলেন “খাখরা” তৈরীর কাজ, আর দেশের পাশাপাশি বিদেশেও তৈরি করেছেন নিজের বড় ব্র্যান্ড

দৈনন্দিন জীবনে খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনের তাগিদে বা ভালোলাগার অনেক ধরনের খাবার খাওয়া হয়ে থাকে। একটা সময় ছিল যখন গুজরাটি খাবার শুধু গুজরাটেই পাওয়া যেত, কিন্তু এখন এর জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে গেছে যে কোন জায়গায় গুজরাটি খাবার পাওয়া যায়। আগে অনেকেই জানতেন না গুজরাটি খাবারে কী আছে, কিন্তু বিখ্যাত সিরিয়াল ‘তারক মেহতা কে উল্টা চশমা’-এর পর মানুষ জানতে পেরেছে গুজরাটি খাবার সম্পর্কে।

গুজরাটি খাবারের বিখ্যাত ঢোকলা বেশির ভাগ মানুষই জানত, কিন্তু এখন গাঠিয়া, ফাফদা থেকে খাখরার মতো স্ন্যাকসের স্বাদ প্রায় সবার জানা। “গুজরাটের” ‘ইন্দুবেন জাভেরির’ খাখরা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বিখ্যাত। খাখরাকে মশলাদার রুটিও বলা হয়ে থাকে। আলোচ্য বিষয় ‘ইন্দুবেন ঝাভেরি খাখরাওয়ালা’ সম্পর্কে, যার খাখরা শুধু গুজরাটেই নয় বিদেশেও বেশ বিখ্যাত। সাধারণ ভাষায় খাখরাকে মশলাদার রুটিও বলা হয়।

এই খাস্তা, শুকনো নাস্তা খুব কম তেল দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি গমের আটা, বেসন এবং কিছু মশলা মিশিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। জৈন সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি খুব পছন্দ করা হয়। ইন্দুবেন গুজরাটের আহমেদাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। আগে তিনি সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে তার ছোট্ট বাড়িতে থাকতেন। ইন্দুবেন আগে একজন সহজ-সরল গৃহিণী ছিলেন।

পরবর্তীতে যখন পরিবারের অর্থের প্রয়োজন হয়, তখন তিনি নিজেই এগিয়ে আসেন এবং দায়িত্ব পালন করেন ও উপার্জনের চিন্তা করতে থাকেন।ইন্দুবেন ১৯৬০ সালে কাজ শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি খাখরা বিতরণ কেন্দ্রে নিজের তৈরি খাখরা বিক্রি করতেন। ইন্দুবেন ঋণ নিয়ে তার স্বামীর জন্য একটি লুনা কিনেছিলেন, যাতে তিনি তার তৈরি করা খাখরা ঘরে ঘরে নিয়ে যেতে পারেন।

সে একাই তার বাড়ি এবং ব্যবসা দুটোই সামলাচ্ছিলেন । কিছু দিনের মধ্যেই, তার খাখরা লোকেদের খুব পছন্দ হয়ে যায় এবং অর্ডার বাড়তে থাকে। তাই তিনি তাকে সাহায্য করার জন্য আরও মহিলা নিয়োগ করেন। ইন্দুবেন ১৯৮১ সালে ৫৪ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন। ইন্দুবেন চলে যাওয়ার পরও তার বানানো খাখরার স্বাদ বেঁচে ছিল মানুষের মধ্যে।

তার ছেলে ‘হীরেন’ ও পুত্রবধূ ‘স্মিতা’ ব্যবসার হাল ধরেন। আজও মানুষ ইন্দুবেনের নামে খাখরা বিক্রয় হয়। ১৯৮২ সালে, ‘ইন্দুবেন খাখরাওয়ালা’ নামে প্রথম আউটলেট চালু করা হয়েছিল, যেখানে খাখরার সাথে অন্যান্য স্ন্যাকসও রাখা হয়েছিল। এরপর হীরেনের দুই ছেলে নিশীথ ও অঙ্কিত জাভেরিও বাবাকে সাহায্য করতে এই ব্যাবসায় আসেন।