১০ হাজার টাকার চাকরি পেতে করতে হয়েছিল কঠিন লড়াই, আজ একটা আইডিয়ার জোরে উপার্জন লাখ লাখ টাকা

আজকাল অনেক মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাকরি করে থাকেন। তবে এমন অনেকেই আছেন যারা গৃহিণী হয়ে তাদের সংসার দেখাশোনা করেন। তারা মনে করেন তাদের নিজস্ব কোনো আয় নেই। বাস্তব কথা হল একজন নারী ভালোভাবে ঘরের দেখভাল করেন বলেই সংসারের গাড়ি চলতে পারে নির্বিঘ্নে। নারীদের উচিত সংসার সামলানোর পাশাপাশি নতুন কিছু শেখা। আজ এমন একজন মহিলার কথা বলা হবে যিনি তার জীবনে অনেক কিছু সহ্য করেছেন। এর পর তার কাজের প্রতি বিশ্বাস রেখে আজ সাফল্য অর্জন করেছেন। এই মহিলা এক সময় মাসে ১০,০০০ টাকায় চাকরি পেতেই লড়াই করছিলেন, কিন্তু আজ তিনি বাড়ি থেকে মাসে ২ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন।

মেয়েটির নাম সরিতা প্যাডম্যান। সরিতার সাফল্যের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। কারণ ছোটবেলা থেকেই তিনি অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। সরিতার জন্মের আগে তাদের বাড়ি খুব সুন্দর ছিল। তার দাদার অনেক জমি ছিল। একটি মুদি দোকান এবং একটি হোটেল ছিল। তবে ব্যবসায়িক অসুবিধার কারণে জমি বিক্রি করে হোটেল বন্ধ করে দিতে হয়। পরিবার বড় ছিল, সবাইকে দোকানে বসার দরকার পরত না। তাই সরিতার বাবা, তার মা মাহেরকে নিয়ে সাঙ্গোলায় থাকতে যান। সেখানে একটি ছোট বাড়ি ভাড়া নিয়ে একটি মুদি দোকান শুরু করেন।

তার পরেই ভেঙে পরে দুঃখের পাহাড়। ১০-১২ দিন পর, মা আবার কাজ শুরু করলেন। দিনরাত পরিশ্রম করে ৪ জন মেয়ের লেখাপড়া শেষ করেন। সরিতা ছিল স্মার্ট, তিনি সংবাদ উপস্থাপক হতে চাইতেন। তার বক্তৃতার দক্ষতা ছিল খুবই ভালো। পরিবারের লোকজন তাড়াতাড়ি মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগি হন।

তবে তার মা পড়াশোনায় সমর্থন করেন। সরিতার এতটাই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল যে তিনি একাই রান্নার পাশাপাশি পড়াশোনা করতে শুরু করেছিলেন। স্নাতক শেষ করার পর, তিনি পুনের দিব্যা পাতিল কলেজে এমসিএ-তে ভর্তি হন। তিনি শিক্ষা ঋণ নিয়ে পড়াশোনা করেন। সে তার মামার কাছে থেকে যায় এবং ছোট ছোট কাজ করতে থাকে।

পরে তার মাও চলে আসেন পুনেতে। ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন তারা। একটি ছোট দুর্ঘটনার কারণে তাকে তার দীর্ঘ চাকরি ছাড়তে হয়েছিল।
এরপর একটি বড় কোম্পানি তার ইন্টারভিউ নেয় এবং সে ইনফোসিসে চাকরি পান। মাসে দশ হাজার টাকা পেতেন তিনি। মা খুব খুশি হলেন তার এই কাজে।

গণেশ পুজোর দিন খুলে গেল ভাগ্য

দেড় বছরের মধ্যে তাকে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত করা হয়। এর পর তিনি স্কটল্যান্ডেও যান। সেখান থেকে তিনি প্রশিক্ষক হন। ২০১০ সালে এক কনস্টেবলের সাথে তার বিয়ে হয়। তার স্বামী ভারতীয় নৌবাহিনীতে কাজ করতেন। বিয়ের পর চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করার ধারণা পেয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি সবকিছু শেখাতেন। তিনি ৫-৬টি ভিডিও পোস্ট করেছেন। গণেশ পুজোর দিন হওয়ায় মোদকের ভিডিও ভাইরাল হয়। এর পরেই তার সাবস্ক্রাইবার দ্রুত বাড়তে থাকে।

৩ দিনে ১ হাজার গ্রাহক এবং ৪ মাসে ১০ হাজার গ্রাহকে বাড়তে থাকে। দীপাবলির পরে, ইউটিউব থেকে প্রথম পেমেন্ট এসেছিল ২ লক্ষ টাকা। দেড় মাসে প্রথম বেতন পান তিনি। এক বছরে দেড় লাখ টাকা উপার্জনের জন্য লড়াই করা সরিতা মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করতে শুরু করে। আজ তার চ্যানেলটি বিস্তার লাভ করেছে। প্রায় ৮ লাখ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে তার। তিনি আজ অনেক নারীর অনুপ্রেরণা।