বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে কে না চায়। বিলাসবহুল জীবন না হলেও যাতে ভালোভাবে থাকার চেষ্টা তা কমবেশি সবারই মধ্যে থাকে। কিন্তু এই যুগেও এমন এক ভগবান রুপি একজন মানুষ আছেন, যে নিজের বিলাসবহুল জীবনযাপন ছেড়ে আদিবাসী গ্রামে এসে থাকছেন। কারণ আদিবাসী গ্রামের মানুষগুলোর ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
সেই মানুষটাকে দেখলে নিছকই একজন ভিক্ষুক মনে হবে। যিনি একটা কুর্তা পড়ে সারাদিন এদিক থেকে ওদিক করে যাচ্ছেন। এই মানুষটাই সাবলীলভাবেই ইংরেজি ভাষা বলে যাচ্ছেন। শুধু ইংরেজি নয় তিনি একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি।ব্যক্তির নাম হলেন আলোক সাগর। তিনি একসময় আইআইটি অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু তিনি জীবনের মানেটা একটু অন্যরকমভাবে বেছে নিয়েছেন। আসুন বিস্তারিত জেনে নিন।
আলোক সাগরের জন্ম হয় ২০ই জানুয়ারি, ১৯৫০ সালে। তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন দিল্লির আইআইটি কলেজ থেকে। তিনি ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংএর স্টুডেন্ট ছিলেন। তিনি আমেরিকায় গিয়ে হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা ডিগ্রি লাভ করেন, ১৯৭৭ সালে। এরপর তিনি ডেন্টাল শাখায় পোস্ট ডক্টরেট করেন। ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ফেলোশিপ করেন। ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত কানাডাতে। এই মানুষটি আরবিআইএর গভর্নরকে পড়াশোনা শিখিয়েছিলেন। কিন্তু আলোক সাগরের চাকরি ভালো লাগছিল না।
তাই তিনি শহরের এত সুখ স্বাচ্ছন্দ ছেড়ে গত ৩০ বছর ধরে মধ্যপ্রদেশের বেতুলের আদিবাসী গ্রামে থাকতে শুরু করেন। যে গ্রামে একটা সময়ে ইলেকট্রিক ছিল না। তিনি প্রথম থেকেই আদিবাসীদের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক অধিকারের জন্য লড়াই করে আসছেন। তিনি তার গ্রামে ৫০ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়েছেন। আজ তার কাছে সম্পত্তি হলো তিনটি কুর্তি এবং একটি কুঁড়েঘর মাত্র। তিনি আদিবাসী মানুষগুলোকে আর্থিকভাবেও দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। গ্রামের বাচ্চাগুলোকে শিক্ষার আলো দেখিয়েছেন। একবার প্রশাসন তরফ থেকে তাকে সন্দেহ করে, যে কেন এই মানুষটি এত কাজ করছেন। তাকে বেতুল থেকে চলে যেতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে সমস্ত তদন্ত করে জানা যায়, এই মানুষটি কোন সাধারন মানুষ নয় তিনি স্বয়ং আইআইটির প্রাক্তন অধ্যাপক আলোক সাগর।