খরচ সিমেন্টের থেকে ৭ গুণ কম, গরুর গোবর দিয়েই AC ঘর তৈরি করলেন এই গবেষক

প্রত্যেক মানুষই তার স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করার কথা ভেবে থাকেন। সবার এমন একটা বাড়ি চাই যাতে সব রকমের সুবিধা থাকবে। হরিয়ানার রোহতাকের বাসিন্দা এ রকমই একজন হলেন ডক্টর শিব দর্শন মালিক। যিনি দেশি গরুর গোবর দিয়ে প্লাস্টার তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমে বাড়ি এয়ার কন্ডিশনারের মত ঠান্ডা থাকে। এরকমই আরেকটা ঘটনা দেখা গিয়েছিল দিল্লিতে।

দিল্লির দ্বারকার কাছে ছাওলা নিবাসী দয়া কিষাণ শোকিন দেড় বছর আগে এরকমই বৈদিক প্লাস্টার দিয়ে বাড়ি তৈরি করেছিলেন। ভারতে প্রায় 3 শতাধিক মানুষ এরকম বাড়ি ব্যবহার করছেন। সাধারণত কাঁচা বাড়ি জলবায়ুর পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না। কিন্তু পাকা বাড়ি সেটা পারে। কিন্তু কাঁচা বাড়ি আবার শীতাপনিয়ন্ত্রণে সক্ষম।

কাজেই এমন এক বাড়ির খুব প্রয়োজন ছিল যেটা পাকা বাড়ির মত মজবুত হবে আবার কাঁচা বাড়ির মতো শীতাপনিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে। ডক্টর শিব দর্শন এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে গবেষণা করছেন। তিনি রসায়নের পি এইচ ডি করেন এবং তিনি আই আই টি দিল্লী, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য বড়ো বড়ো প্রতিষ্ঠানগুলোর পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন।

গবেষণার ফলশ্রুতি তিনি বৈদিক প্লাস্টার দিয়ে বাড়ি বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার মতে আমাদের দেশে মোট 3 টন গোবর উৎপন্ন হয় যা সঠিকভাবে ব্যবহার না হওয়ার ফলে নষ্ট হয়। এই গোবরের সাথে কাঁচা মাটি, জিপসাম, লেবুর পাউডার, চুনের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি হয় এই বিশেষ প্লাস্টার। এতে বাইরে যদি 40 ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকে তাও ভেতরে তাপমাত্রা 27/28 ডিগ্রি হবে।

এই প্লাস্টারের গুনাগুন যত বলা হবে ততই কম। এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, নগ্ন পায়ে এই বাড়ির মেঝেতে চললে পা কে আরাম দেবে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে যা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। এর দাম সিমেন্টের দামের প্রায় 6/7 গুণ দাম কম। প্রতি বর্গফুটে মাত্র দশ টাকা করে খরচ হয়। এই প্লাস্টারটি আদ্রতা খুব তাড়াতাড়ি শোষণ করে নিতে পারে।

এটা অগ্নিরোধী ও শব্দরোধী সাথে জীবাণুমুক্ত। ডক্টর শিব দর্শন বলেন যে প্রকৃতির সাথেই আমাদেরকে বাঁচতে হবে। একসময় আমাদের বাড়িতে গোবরের লেপন দেওয়া হতো। গোবরের বাতাসকে বিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে এবং এর এই গুনাগুনকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই প্লাস্টার। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশ থেকে গুজরাট ভারতের প্রতিটি রাজ্যেই কমবেশি এই পরিবেশ-বান্ধব ও শীতাপ নিয়ন্ত্রক, সস্তা বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এখন এই প্লাস্টারের চাহিদা অনলাইনে ব্যাপক পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।