বছর গেলে আয় করছেন ৩১২ কোটি টাকা, তবু এই ধনকুবের ইউটিউবারের মনে শান্তি নেই, ভুগতে থাকেন জটিল অপরাধবোধে

আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে এমন এক ব্যক্তির বিষয় আলোচনা করতে চলেছি যিনি বছরে প্রায় ৩১২ কোটি আয় করেন এবং বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে তাকে গণ্য করা হয়। তবে ইনি কিন্তু কোনো কোনো শিল্পপতি বা ধনকুবের নন। ইনি শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিডিও বানান ও কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন। এই ব্যক্তির নাম হলো ইউটিউবার (youtuber) মার্ক এডওয়ার্ড ফিশবাচ (Mark Edward fischbach) এবং এনার বয়স মাত্র ৩৩ বছর। যদিও ইউটিউবে তিনি মার্কিপ্লায়ার (Markiplayer) নামে পরিচিত। সম্প্রতি হওয়া একটি সাক্ষায়কারে মার্ক এডওয়ার্ড ফিশবাচ জানিয়েছেন যে তিনি তার মনে শান্তি নেই কারণ তিনি সবসময় জটিল অপরাধবোধে ভোগেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে তার অশান্তির কারণ কী? আসুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে গোটা বিষয় বিস্তারিত জেনেনি।
ইউটিউবার (Youtuber) মার্ক এডওয়ার্ড ফিশবাচের (Mark Edward fischbach) বক্তব্য যে তার জীবনে টাকার অভাব নেই কিন্তু এত উপার্জন মাঝেমধ্যেই অর্থহীন মনে হতে থাকে ও এটাও মনে হতে থাকে যে তিনি বিশ্রী রকমের বেশি উপার্জন করছেন। অর্থাৎ তার নিরন্তর মনে হতে থাকে এত অর্থ উপার্জন ঠিক নয়। তিনি ঠকাচ্ছেন সবাইকে। তিনি বলেছেন “আমি এত উপার্জন করার জন্য অপরাধবোধে ভুগি। আমার মনে হয়, ইউটিউব থেকে অর্থোপার্জনের যে পদ্ধতি তার ভুল ফায়দা নিচ্ছি আমি। এতটা না হলেও হত”। এছাড়া জানিয়ে দি যে মার্কের এখন বর্তমান ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা হলো ৩ কোটি ৩০ লক্ষ্য। মার্ক আরো বলেছেন যে “এই সাফল্যকে অস্বীকার করার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু আমার বলতে একটুও বাধা নেই যে, এত সাফল্য আমি চাইনি। আমি শুধু নিজের পছন্দের কাজ করতে চেয়েছিলাম। আর তা থেকে পাওয়া অর্থে একটু ভালো থাকতে চেয়েছিলাম।” এছাড়া মার্ক জানিয়েছে তিনি তার অর্থ মাঝে মাঝে যাদের প্রয়োজন তাদের দান করে দেন ও কখনো কখনো ইউটিউবার বন্ধুদের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। যাতে তাঁরা সুদিন দেখতে পান। এছাড়া ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভাল উদ্দেশ্যের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে নাম করেছেন মার্কস। ফোর্বসের অল্পবয়সি প্রভাবশালীদের তালিকাতেও নাম উঠেছে তাঁর। এ ছাড়াও ক্যানসার গবেষণা, রূপান্তরকামীদের সমর্থনে বহু বার দরাজহস্ত হয়েছেন মার্ক। এখন ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি একটি নিজস্ব পোশাকের ব্র্যান্ডও চালু করেছেন মার্ক। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তাঁর যা আছে তা দিয়ে অনেকের ভাল করতে চান তিনি। তাতে যদি তাঁর মনের কুণ্ঠা কিছুটা কমে।
এছাড়া মার্কের সফলতা অর্জন ও পরিবার আর পার্সোনাল জীবনের বিষয় জানিয়ে দি যে হাওয়াই দ্বীপের হনুলুলুতে থাকতেন মার্কের বাবা-মা। তবে মার্ক জন্ম থেকেই আমেরিকার বাসিন্দা। সেখানেই পড়াশোনা, কেরিয়ারও। প্রথম জীবনে অত্যন্ত গরিব ছিলেন মার্ক। কষ্ট করেই তাঁকে লেখাপড়া করিয়েছিলেন তার বাবা-মা। মার্ক জানিয়েছেন তার বন্ধুরা প্রায় তার গরিবীর মজাক ওড়াতো। ২০০৮ সালে পিতার মৃত্যুর পর আমেরিকার ওহায়োর সিনসিনাটির কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন এবং মিউজিকের শখ রাখতেন তাই ট্রাম্পেটও বাজাতেন মার্ক। এরপর ২০১২ সালে অর্থাৎ যখন মার্কের বয়স যখন ২৩ বছর ছিল তখন তার ইউটিউবের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছিল ও তাই ইউটিউবে মন দেওয়ার জন্য তিনি কলেজের পড়াশোনা অসুম্পূর্ণ রেখে কলেজ ছেড়ে দিয়েছিলেন। কলেজ ছাড়ার ১০ বছর পর আজ মার্ক ইউটিউবের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার মালিক। মার্ক সিনসিনাটি ছেড়েছেন বহু দিন। এখন তিনি লস অ্যাঞ্জেলসের লাক্সারি সোসাইটির বাসিন্দা ও লাক্সারি বাংলোর মালিক। হলিউডের তারকাদের বাড়ি সাজান যেইসব রুম ডেকোরেটরের লোকেরা সেইসব লোকেরাই মার্কের বাংলোকে সাজিয়েছে। জানিয়ে দি মার্ক নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মূলত তাঁর নিজের অভিনীত কমেডি শো, হরর গেম কিংবা ভিডিয়ো গেমের সমাধানের ভিডিয়ো তৈরি করেন ও এই ভিডিও থেকেই কোটি কোটি টাকা উপার্যন করেন তিনি।