ভারতের একমাত্র ট্রেন যেটিতে গত ৭৩ বছর ধরে মানুষজন করেন বিনামূল্যে ভ্রমণ, জেনে নিন কেন আজ পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়নি

আপনি কি কখনও টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন? সমাজে অনেকেই আছেন যারা এই বিপর্যয়ে সফল হয়েছেন। আবার কেউ কেউ টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণে মোটা জরিমানা দিতে এমনকি জেল খাটতেও বাধ্য হয়েছেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, দেশে এমন একটি ট্রেন পরিষেবা রয়েছে , যা যাত্রীদের বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করাচ্ছে। ব্যাপারটা কিছুটা অদ্ভুত শোনালেও ‘ভাকড়া’ রেলওয়ে ট্রেনের যাত্রীদের জন্য এটা স্বাভাবিক।

এই বিশেষ ট্রেনটি পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের সীমান্ত অঞ্চলে চলে। যেখানে লোকেরা নাঙ্গল এবং ভাকরের মধ্যে যাতায়াতের জন্য এটি ব্যবহার করে। ৭৩ বছর ধরে যাত্রীরা এই ট্রেনটি বিনামূল্যে ব্যবহার করছেন। এই ট্রেনটিতে যাতায়াতের জন্য টিকিট বুকিংয়ের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না যাত্রীদেরকে। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভাকরা-নাঙ্গল রেল পরিষেবা ১৯৪৮ সালে শুরু হয়েছিল।

ভাকরা- নাঙ্গল বাঁধ নির্মাণের সময় একটি বিশেষ রেলপথের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল। কারণ সেই সময়ে নাঙ্গল ও ভাকরের মধ্যে যাতায়াতের কোনো উপায় ছিল না। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ভারী যন্ত্রপাতি সহ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে রুটের পাশে একটি রেলপথও নির্মাণ করা হবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ট্রেনগুলি স্টিম ইঞ্জিন দ্বারা চালিত হত।

১৯৫৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা লোকোমোটিভ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। এবং বর্তমানে, এই অন্যতম ট্রেনটি তার ৬০ বছরের পুরোনো ইঞ্জিন দিয়ে চলছে। এই ট্রেনের চেয়ারগুলো ঔপনিবেশিক যুগের। এছাড়াও কোচগুলোও কাঠের তৈরি। এবং এই ট্রেনটি শুধুমাত্র ডিজেলে চলে। রিপোর্ট অনুসারে, ট্রেনটি দৈনিক প্রায় ৫০ লিটার তেল খরচ করে থাকে।

 

 

তবুও ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড (বিবিএমবি) এটি বিনামূল্যে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগে এই স্পেশাল ট্রেনে ১০টি বগি থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩টি বগি রাখা হয়েছে। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে বিবিএমবি তাদের বিনামূল্যে ভ্রমণ বন্ধ করার কথা ভাবছে। প্রায় ৩০০ জন যাত্রী একসঙ্গে এই ট্রেনে যাতায়াত করে। স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীরা এই ট্রেন থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় বলে জানা যায়।