নামের পদবী উচ্চারণ করলে দাঁড়ায় একটি অশ্লীল ভাষা, চাকরির দরখাস্ত করতে গিয়ে বিপাকে তরুণী

বর্তমান সময়ে চাকরি পেতে গেলে অনেক পরিশ্রম এবং ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় চাকরি পাবার সময় অথবা চাকরি বজায় রাখার জন্য মহিলাদের অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু চাকরির দরখাস্ত জমা দিতে গিয়ে শুধুমাত্র নাম বা পদবীর জন্য চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হলেন এক তরুণী। আমাদের সমাজে অনেকেরই এমন নাম বা পদবী থাকে যা শুনতে অদ্ভুত লাগে । স্কুল ,কলেজ ,ইউনিভার্সিটি লাইফে অনেক সময় বন্ধুমহলে হাসি মজার খোরাক হতে হয় এই অদ্ভুত নাম -পদবীর জন্য ।

তবে চাকরি পরীক্ষায় দরখাস্ত দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র নাম বা পদবীর জন্য হেনস্থা বা হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সম্প্রতি অসমের আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক তরুণী চাকরির দরখাস্ত দিতে গিয়ে এমনই অদ্ভুত হয়রানির শিকার হয়েছে। শুধুমাত্র নামের পদবী সাথে অশ্লীল শব্দের মিল থাকার কারণে চাকরির দরখাস্তের জন্য আবেদনপত্র বাতিল করে দেয়া হয়। তরুণী নাম প্রিয়াঙ্কা। তিনি অসমের গুহাটির বাসিন্দা এবং আদিবাসী সম্প্রদায় তরুণী।

এই তরুণীর শিক্ষাগত যোগ্যতার যথেষ্টই ভালো “এগ্রিকালচার ইকোনমিক্স এন্ড ফার্ম মম্যানেজমেন্ট” নিয়ে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি চাকরি ক্ষেত্রে যথেষ্ট যোগ্য সম্প্রতি এই তরুণী কেন্দ্রীয় কোম্পানি ন্যাশনাল সিড কর্পোরেশন লিমিটেডের চাকরির জন্য দরখাস্ত করেন। কিন্তু সেখানে সমস্ত রকম পূরণ করার পরও বারবার তাঁর সব ক্যান্সেল হয়ে যায় এবং তখনই তাঁর সন্দেহ লাগে।

প্রিয়াঙ্কা আসলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের তরুণী এবং সেখানে মূলত দুই ধরনের পদবীর চল আছে। এক্ষেত্রে প্রিয়াঙ্কার পদবী হল ‘চুতিয়া’ । প্রিয়াঙ্কার দাবি তিনি যখন অনলাইনে চাকরির জন্য দরখাস্ত করছিলেন তখন এই চুতিয়া শব্দটির জন্য সফটওয়্যার এর তরফ থেকে সেটিকে একটি অশ্লীল শব্দ চিহ্নিত করে তাঁর ফর্ম বাতিল করে দেয়া হচ্ছিল । সংস্থাকে ইমেইল মারফত সমস্ত ঘটনাটা খুলে বলেছেন প্রিয়াঙ্কা ।

কিন্তু তাঁর পদবী কে অনলাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ডিটেকটিং সফটওয়্যার অশ্লীল শব্দ বলে বাতিল করে দেয় । শুধুমাত্র তাঁর পদবী সঙ্গে একটি অশ্লীল শব্দের মিল থাকার কারণে অনেক বেসরকারি সংস্থাও তাঁর চাকরির জন্য আবেদন গ্রহণ করেনি। এমনটাই দাবি এই আদিবাসী তরুণীর। তবে শেষপর্যন্ত তরুণী নিজের সমস্যা প্রকৃত ব্যাখ্যার জন্য তিনি নেট মাধ্যমকে বেছে নেন। তাঁর কথামতো তিনি যখনই ইন্টারভিউ দিতে যান তাঁকে নিয়ে অত্যন্ত হাসাহাসি হয় । তরুণী কথাই লোকজনকে বোঝাতে বোঝাতে আমি ক্লান্ত।

তবে আপাতত ওই সংস্থার তরফ থেকে তরুণীকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। বারবার তাঁর আবেদনপত্র বাতিল হওয়ার জন্য এবং নিজের সমস্ত সমস্যাকে ইমেইলের মাধ্যমে সংস্থাকে জানানোর ফলে সংস্থাও ব্যাপারটি নিয়ে ভেবে দেখেছে। তবে বর্তমানে চাকরি আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে এই আদিবাসী তরুণী।