‘সত্যি বলছি আর করবো না’, শিক্ষিকার রাগ ভাঙাতে কাতর আর্জি খুদের, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল ভিডিও

টিচার-স্টুডেন্টের ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে আর সবাই নোংরা মন্তব্য করছে

আজকাল এই বিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media)  সাথে জুড়ে নেই এরকম মানুষ নেই বললেই চলে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে (social media) আজকাল বিভিন্ন কারণে ব্যবহার করে থাকি। যেমন কেউ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যবসার কাজের জন্য, জিনিস কেনা-বেচার, কেউ সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েক করে উপার্জন করে আবার কেউ কেউ শুধু এন্টারটেন্টমেন্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। আর এন্টারটেন্টমেন্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা লোকেদের সংখ্যাই একটু বেশি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা রোজই অনেক ধরনের ফটো, ভিডিও ও খবর দেখতে পাই। এই সব ভিডিওর মধ্যে কিছু কিছু ভিডিও বা খবর এমন থাকে যা দেখার পর আমরা অবাক হয়ে যাই বা এমন কিছু দেখতে পাই তা দেখে আমাদের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যায় বা এমন কিছু দেখি যা আমাদের মনকে খুশি করে তোলে।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনি একটি মনকে খুশি করা মিষ্টি ভিডিও ভাইরাল (Viral video) হচ্ছে। তবে অনেকে এই ভিডিওটিকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করছে। আসুন এই এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এই ভিডিওর বিষয় বিস্তারিত জেনেনি।

বিষয়টি হলো সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল (Viral video) হচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে একটি স্কুলের ছোটো বাচ্চারা দুষ্টমি করায় শিক্ষিকা রেগে গেছে ও বাচ্চাদের সাথে কথা বলছে না। সেই বাচ্চা স্টুডেন্টগুলির মধ্যে একটি বাচ্চা টিচারের রাগ ভাঙাচ্ছে ও বলছে সে এমন ভুল আর কোনদিন করবে না। তারপর ভিডিওয়ের শেষে টিচার (Teacher) বাচ্চাটিকে বা স্টুডেন্টটিকে (student) বলছে যেন বাচ্চাটি টিচারের গালে চুমু খায়। এই ভিডিও দেখে অনেকেই টিচার (Teacher) ও বাচ্চা স্টুডেন্টের (Student) বন্ডের প্রশংসা করলেও অনেক খারাপ বা নোংরা মন্তব্য করছে। এই খারাপ মন্তব্য গুলির উপর টিচার একটি ইন্টারভিউতে ট্রোলারদের জবাব দেন। আসুন জেনেনি টিচার কি বলেছে।

সবার আগে জানিয়ে দি যে এই টিচারের নাম হলো শ্রীয়া ত্রিপাঠী। ইনি প্রয়াগরাজের বাসিন্ধা ও তিনি গত ১ বছর ধরে আনন্দরাম জয়পুরিয়া স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। এই স্কুলে তিনি এলকেজি স্ট্যান্ডার্ডের ক্লাস টিচার। জানিয়ে দি যে টিচার শ্রীয়া কিশোরী লাল মহাবিদ্যালয় থেকে D.El.ed. করেন এবং তারপর শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন। ভাইরাল ভিডিওয়ের বিষয় শ্রীয়া ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় বলেন যে “মানুষ আমাদের ভিডিওটি পছন্দ করছে তা দেখে সত্যি খুব ভালো লাগছে। ভিডিওটি খুব ন্যাচারাল ও সুন্দর ভিডিও ছিল আর মানুষ তো সুন্দর জিনিস পছন্দ করেই থাকে।”

এরপর স্টুডেন্ট ও টিচারের সম্পর্ক নিয়ে টিচার বলেন যে “শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীর সম্পর্ক মা-সন্তানের মতো হয়। তাই টিচারদের একজন মায়ের মতো তার স্টুডেন্টদের যত্ন নেওয়া উচিত এবং ভালো আচরণ করা উচিত।” এরপর টিচার শ্রীয়া নিজের ছোটবেলার কথা উল্লেখ করে বলেন যে তিনি নিজে যখন ছাত্রী ছিলেন তখন তাকে অনেকবার শিক্ষকদের হাতে মার খেতে হয়েছিল। অনেক রকম শাস্তি পেতে হয়েছিল শিক্ষকদের দ্বারা। যেমন-কান ধরে থাকা, বেতের দ্বারা মার, গ্রাউন্ডের চক্কর কাটা ইত্যাদি। আগেকারে টিচার-স্টুডেন্টের সম্পর্ক এমনি কড়া প্রকৃতির ছিল। কিন্তু এখন পরিবেশ অনেক বদলে গেছে।

এখনকার বাচ্চাদের মেরে-বকা দিয়ে নয় বরং যত ভালোবেসে বোঝানো হবে তত তারা কথা শুনবে। উল্টে যদি মারধোর করা হয় কথা শোনা তো দূরের কথা টিচারকে উপযুক্ত সম্মান পর্যন্ত দেবেনা আজকালের বাচ্চারা। এরপর টিচার শ্রীয়া, যারা এই ভিডিওটিকে নিয়ে ট্রোল করছিল তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন যে ” প্লিজ যারা এই ভিডিওটির বিষয় নোংরা মন্তব্য করেছেন তারা এমন নোংরা কথা বলে নোংরামি ছড়াবেন না। এটি একটি ভালো ভিডিও আর তাই এটিকে ভালো ভাবে দেখুন।” তবে ট্রোলাররা তাদের কাজ করেই চলেছে।

কোনো কোনো ইউজার এই ভিডিওটির বিষয় নোংরা কমেন্ট করে লিখছে- “এটি বাচ্চাটির যৌন শোষণ করা হচ্ছে”, আবার কেউ লিখছে ” ইনি মহিলা টিচার বলে কেউ কিছু বলছে না এটাই যদি একজন পুরুষ টিচার করতো তাকে জেল পর্যন্ত যেতে হতো” আরেকজন লিখেছে “এইসব নোংরা মহিলা টিচার নামে কলঙ্ক এদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হোক এবং পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হোক” ইত্যাদি।