একসময় ঠেলাগাড়ি থেকে শুরু করেছিলেন ব্যবসা, আজ মাস গেলে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা

আজকাল বেশিরভাগ মানুষ চাকরির থেকে বেশি ব্যবসার (Business Idea) প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমনকি এখন এমন অনেক ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মানুষ তার মোটা টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করা শুরু করছে (now people resign the 9 to 5 job and show interest in business) ও সফলও হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় মানুষ ব্যবসা করার ভাবনা থেকে পিছিয়ে আসে কারণ ব্যবসা করতে গেলে অনেক মোটা অংকের মূলধনের প্রয়োজন হয় যা সবার পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু যারা মূলধনের অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারছেন না ভয় পাচ্ছেন তাদের জন্য আজ আমরা একটি অনুপ্রেরণা দায়ক সত্যিকারের গল্প নিয়ে এসেছি যা আপনাকে সাহস দেবে আপনাকে আপনার সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার। তবে আসুন দেরি না করে জেনেনি পেট্রিসিয়া নারায়নের (Petricia Narayan) সফলতার গল্প (Success story)।

Success story of Petricia Narayan

একসময় যখন পেট্রিসিয়া নারায়নের (Petricia Narayan) এর স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছিল তখন তিনি অনেক কষ্ট করে নিজের ও নিজের বাচ্চাদের জন্য খাওয়ার জোগাড় করতেন। তবে অবশেষে তার পরিশ্রম বৃথা যায়নি আর বর্তমানে তিনি একজন কোটিপতি সফল মহিলা। জানিয়ে দি পেট্রিসিয়া চেন্নাইয়ের বাসিন্ধা। আর তিনি সন্দীপা রেষ্টুরেন্ট (Sandipa Resturant chain) চেনের ডিরেক্টর। তবে রেস্টুরেন্টের মালিক হওয়ার যাত্রা এতো সোজা ছিলো না। তিনি প্রথমে একটি ঠেলা গাড়ির মাধ্যমে নিজের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তারপর যখন তিনি ব্যবসা করেন সফলতা পান। আজ ২০০ এর বেশি কর্মচারী তার অধীনে কাজ করে।

পেট্রিসিয়ার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন তিনি অন্য ধর্মের এক ছেলের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাই তিনি নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সেই ছেলেকে বিয়ে করে নিয়েছিলেন। এই কারণে পেট্রিসিয়ার বাবা তার সাথে সমস্ত সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু পেট্রিসিয়ার ড্রাগ অ্যাডিক্টেড ছিলেন যার ফলে তিনি পেট্রিসিয়াকে মারধোর করতো। এরপর একটা সময় পর পেট্রিসিয়া বুঝতে পেরেছিলেন যে পরিবারের বিরুদ্ধে যাওয়া এবং বিয়ে করা একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তার স্বামী যখন তাকে অনেক নির্যাতন করতে শুরু করেন তখন পেট্রিসিয়া তা আর সহ্য করতে না পেরে স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় পেট্রিসিয়ার দুটি সন্তানও ছিল। তবে অসহায় হয়েও হাল ছাড়েননি পেট্রিসিয়া। এরপর বাচ্চাদের খাওয়ানো ও লালনপালন করার জন্য তিনি চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে ঠেলা দেওয়া শুরু করেছিলেন। সারাদিন সমুদ্র সৈকতে ধরে জিনিসপত্র বিক্রি করে তার হাতে আসত মাত্র ৫০ টাকা। কিন্তু তা সত্বেও হাত মানেননি তিনি ও আরো কঠিন পরিশ্রম করতে শুরু করেন। এরপর এমন এক সময় আসে যখন তার আয় বাড়তে থাকে মাসিক ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

Success story of Petricia Narayan

 

এরপর পেট্রিসিয়া স্লাম ক্লিয়ারেন্স বোর্ড এবং ন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং স্কুলে ক্যান্টিন চালানো শুরু করেছিলেন। এই কাজ দিয়ে প্রতি সপ্তাহে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে শুরু করেন তিনি। তারপর নিজের মেয়ের অনেক বড় করে বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন বাদে এক দুর্ঘটনায় মেয়ে ও জামাই মারা গেছিল। যার ফলে মেয়ের মৃত্যুতে পেট্রিসিয়া পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু এবার এই কঠিন পরিস্থিতিতে তার ছেলেও তার পাশে ছিল। আর পেট্রিসিয়ার ছেলে তাকে সামলায়। এরপর পেট্রিসিয়া দুজন কর্মচারীর সাথে মিলে নিজের মেয়ের নামে সন্দ্বীপা রেষ্টুরেন্ট শুরু করেছিলেন। আর এই রেস্টুরেন্টের ব্যবসা বেশ সফলতা পায়। আর এই সন্দ্বীপা রেস্টুরেন্টের ১৪টি আউটলেট রয়েছে ও ২০০ এর বেশি কর্মচারী এই রেস্টুরেন্টে কাজ করে। আর এই রেস্টুরেন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেন পেট্রিসিয়া।