গল্প এমন এক মুরগির যে বিনা মাথাতেই বেঁচেছিল ১৮ মাস, মালিক কে মালামাল করেই ত্যাগ করেছিল প্রাণ

একটি প্রাণী মাথা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব একটি ব্যাপার। তবে এরকমই একটি ঘটনা বহু বছর আগে আমেরিকায় ঘটেছিল। এবার আপনাদের মনে হতে পারে অর্থহীন বিষয়টি বা এই সম্পর্কে চিন্তা করার কোন প্রশ্নই হতে পারে না। আসলে ১৯৪৫ সালে একটি মুরগি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কারণ সেই মুরগিটি মাথা ছাড়াই ১ বছরের বেশি বেঁচেছিল। এই বিষয়টা এতটাই বিখ্যাত হয়েছিল পুরো বিশ্বের কাছে, তার একটি মূর্তি আমেরিকা শহরে এখনও রয়েছে।

মাথা ছাড়াই বেঁচে রইল মোরগ

 

লয়েড ওলসেন সেই মুরগির মাথা কেটে ফেলার পর সেটি মারা না গিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। সারাদিন এদিক ওদিক দৌড়ানোর পর লয়েড তাকে রাতে একটি বাক্সে বন্ধি রাখেন। তিনি পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন যে মুরগিটি তখনো বেঁচে আছে। মোরগটি বেঁচে থাকার বিষয়টি দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। তিনি এই মাথা কাটা মুরগিটির নাম দেন মাইক এবং এটি নিয়ে তিনি অন্যদের কাছে বাজি ধরতে শুরু করেন।

সবাইকে তিনি বলেন যে তাঁর কাছে এমন একটি মুরগি আছে যেটি মাথাবিহীন অবস্থাতেও জীবিত। ধীরে ধীরে ঘটনাটি আশে পাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং আমেরিকায় বিভিন্ন শহরে তিনি মুরগিটাকে নিয়ে প্রদর্শনী করতে শুরু করেন । এইভাবে, তিনি মুরগির প্রদর্শনী করিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে শুরু করেন|। তিনি সেটিকে জীবিত রাখার জন্য সরাসরি পাইপের মাধ্যমে তরল খাবার ঢালতেন এবং সিরিঞ্জের সাহায্যে গলা থেকে শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতেন।

১৯৪৭ সালের 17 ই মার্চ তাঁর স্ত্রীর সাথে তিনি সফরে ছিলেন। ওই দিন অ্যারিজোনা নামক একটি হোটেলে তাঁরা রাত্রি যাপন কালীন সময়ে তাঁদের মুরগিটির আজব শব্দ শুনতে পান। তাঁরা দেখেন মাথা বিহীন মুরগিটি গলা জাপটাচ্ছে । তবে তাকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছিল সিরিঞ্জ, যেটি সেই মুহূর্তে তাঁদের কাছে ছিল না। তারপর মুরগিটি মারা যায়। তবে সেটি থেকে লয়েড ইতিমধ্যেই অনেক আয় করে ফেলেছিলেন।

মাথা ছাড়া কীভাবে বেঁচে রইলো মুরগিটি?

 

মাথা না থাকার পরেও কিভাবে বেঁচে ছিল-এই প্রশ্ন টি মানুষের মধ্যে জাগা স্বাভাবিক। তবে কিভাবে বেঁচে ছিল এটি? তাহলে আপনাদের বলি, একটি মুরগির চোখ তার মস্তিষ্কের অর্থাৎ খুলির পিছনের অংশে থাকে। এই অবস্থায় লয়েড মুরগির মাথা কাটলেও খুলির পিছনের অংশ শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে। এইভাবে সেটি জীবিত থাকে এবং এদিক ওদিক পালাতে শুরু করে। তবে এই অবস্থাতেও মাইক এত মাস বেঁচে ছিল, এটা সত্যিই এক ধরনের অলৌকিক ঘটনা। ফ্রুটাতে তার একটি মূর্তিও রয়েছে এবং সেটিকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর সেখানা হেডলেস চিকেন ফেস্টিভ্যাল হয়।