চীনে ৬৩০ ফুট গভীর সিঙ্কহোলের নীচে দেখা মিলল বিশাল জঙ্গলের

পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে যেগুলো খুবই রহস্যপূর্ণ। যেখান থেকে প্রতিদিন কিছু না কিছু আবিষ্কার হয়ে চলেছে । সম্প্রতি একদল বৈজ্ঞানিক চীনে একটি বিশাল সিঙ্কহোল (Sinkhole) আবিষ্কার করেছেন। যার নীচে সন্ধান মিলেছে একটি বনের। সিঙ্কহোলটির গভীরতা প্রায় ৬৩০ ফুট অর্থাৎ ১৯২ মিটার।

চীনের একদল বিজ্ঞানী এই সিঙ্কহলের গভীরে প্রবেশ করেন। সেখানকার দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান । বিজ্ঞানীরা এর গভীরে প্রবেশ করার তিনটি প্রবেশপথ খুঁজে বের করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁদের সন্ধান মিলেছে প্রায় ৪০ মিটার উঁচু কতকগুলি গাছের। এই গাছগুলো তার লম্বা ডালের সাহা সূর্যের আলো নেয়। এমন উচ্চ গাছ বিশিষ্ট বনের সন্ধান মিলেছে চীনের গুয়াংজি ঝুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লেই কাউন্টিতে । বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন যে, এই বনের মধ্যে এমন অনেক প্রজাতির গাছ থাকতে পারে যেগুলি এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।

অ্যাসিড বৃষ্টি থেকে নির্গত জলের কারণে মাটি তার জায়গা থেকে সরতে শুরু করে এবং সেখানে সৃষ্টি হয় গর্ত । এভাবে যখন গর্তগুলি যথেষ্ট বড় হয়ে যায়, তখন আশেপাশের মাটিতে ধস নামে এবং পাথর ভেঙে পড়ে, যেটি পরবর্তীতে একটি সিঙ্কহোলের রূপ নেয়।

আবিষ্কৃত সিঙ্কহোল গুলি ১০০৪ ফুট লম্বা এবং ৪৯২ ফুট চওড়া। আপনাদের জানিয়ে রাখি, চীনের দক্ষিণাঞ্চলে গুহা এবং সিঙ্কহোল প্রচুর পরিমানে দেখা মেলে। অনেক সিঙ্কহোল খুব ছোট আকারে হয়, যা মাত্র এক মিটার। তবে গুহার প্রবেশদ্বারে তেমনই দেখা মেলে না, কিন্তু ভিতরে গেলে অনেক নতুন নতুন কিছু জিনিসে সন্ধান মেলে। চীন ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সিঙ্কহলেট সন্ধান মেলে, তবে সেখানে পাওয়া যায় না।

বিজ্ঞানীদের দলের নেতৃত্ব রয়েছেন চেন লিক্সিন। তিনি জানিয়েছেন, এই গুহাগুলিতে এমন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গাছে, যা আগে আবিষ্কৃত হয়নি। এই আবিষ্কার নিয়ে বিজ্ঞানীরা তদন্ত করছেন, যাতে করে অনেক নতুন তথ্য সামনে আসে।

সিঙ্কহোল ও গুহাগুলি অতীতে জীবনে আশ্রয় কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল-এটি অনেক বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেন । শুধু তাই নয়, এগুলি ভালো জলের উৎস, যা কোটি কোটি মানুষের তৃষ্ণা মেটায়। আপনাদের জানিয়ে রাখি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ জলের উৎস সিঙ্কহোল এবং গুহা, যা পানীয়ের জন্য ব্যবহৃত করে। তবে এগুলিতে মানুষের হস্তক্ষেপ বাড়ছে, সে কারণে এগুলি দূষণের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।