জিভ ছুঁতেই কেন ঝাল লাগে লঙ্কা? জল নয় এই খাবার খেলে চলে যায় জ্বালা

লংকা (chilli) এমন একটি ফল যা এই পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ কম-বেশি খেয়ে থাকে। এই ফলটি খেতে অতিরিক্ত ঝাল হয় কিন্তু তা সত্ত্বেও এই ফল ছাড়া কোনো খাওয়ার তৈরি হলে সেই খাওয়ারে স্বাদে যেন কিছু একটা অসম্পূর্নতা থেকে যায়। বলা যেতে পারে খাওয়ারে লংকা না থাকলে যেন খাওয়ারে স্বাদই ভালো হয় না। এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত লংকাটি (Chilli) হলো জীনস ক্যাপসিকাম। এই লংকাটা সবচেয়ে বেশি বিভিন্ন খাওয়ারের রেসিপিতে ব্যবহার করা হয়। যেই লংকা আমাদের খাওয়ারের স্বাদ এতো বেশি বাড়িয়ে তোলে তার স্বাদ সম্পর্কিত বিজ্ঞান (science behind the spicyness of chilli) সম্পর্কে সকলের জানা উচিত। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ তা জানিনা। তবে চিন্তা নেই আজ আমরা এই আর্টিকেলে লংকার স্বাদের বিজ্ঞান (science behind the spicyness of chilli) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন যে লংকার মধ্যে কী এমন থাকে যার রস আমাদের মানুষদের হাতে, চোখে, মুখে, জিভে বা শরীরের যেই অংশে লাগুক সেই অংশে অতিরিক্ত পরিমানে জ্বালার সৃষ্টি হয়? কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যে পাখিদের লংকা খেয়ে দিলে তার সহজেই লংকা খেয়ে ফেলে ও তাদের আমাদের মতো কোনো জ্বালার সৃষ্টি হয় না লংকা খেলে। আসলে জানিয়ে দি যে লংকার ভেতরে যে ঝাল বস্তু থাকে তা একটি বিশেষ তথ্যের কারণে সৃষ্টি হয়। এই তথ্যটিকে ক্যাপসাইসিন বলে।
যখনই এই ক্যাপসাইসিন আমাদের মুখে বা জিভে পরে তখন এটি TRPV1রিসেপ্টার্সকে ট্রিগার করে। এর সক্রিয় হওয়ার কারণে যেটি আমাদের অনুভব হয় তাকেই ঝাল বা ঝালের জ্বালা বলে থাকি আমরা। ক্যাপসিন মারাত্মক ঝাল বা জ্বালা তো সৃষ্টি করে তবে এর জ্বালার বা ঝালের কোনো স্থায়ী প্রভাব থাকে না তাই বেশি করে লংকা খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে লংকা খেলে চোখ, মুখ, জিভ ও কান এতো পরিমানে ঝালের চোটে জ্বলে যে মানুষ ছটপট করতে থাকে।
লংকা ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস আবিষ্কার করেছিলেন। এটি ৬০০০ বছর আগে উত্তর মধ্য আমেরিকায় ব্যবহৃত হয়েছিল এবং ১৬ শতকের মধ্যে ইউরোপে পৌঁছেছিল। এর তীক্ষ্ণতা স্কোভিল তাপ ইউনিটে পরিমাপ করা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল লংকা ক্যারোলিনা রিপারের তীক্ষ্ণতা এই স্কেলে ২২ লাখ ইউনিট পর্যন্ত হতে পারে। আপনি যদি মনে করেন যে এই লংকার তীক্ষ্ণতা জল খেয়ে শান্ত করা সম্ভব তবে তা কন্তু নয়। যেহেতু ক্যাপসিন দ্রবণীয় নয় তাই এর ঝাল চিনি, মধু, মিষ্টি দই বা মিষ্টি দিয়ে শান্ত করা সম্ভব কিন্তু জল দিয়ে কখনোই না।