মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়ে ডাক্তার হবে, মেয়ে 40 লাখের চাকরি ছেড়ে তৈরি করেছে 100 কোটি টাকার কোম্পানি

কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা তাদের জীবনে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন, যেগুলোকে দেখে অন্য লোকেরা তাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে। কিন্তু পরে যখন সেই সিদ্ধান্তটি সঠিক প্রমাণিত হয় তখন বিদ্রুপ করা মানুষ গুলোই আবার প্রশংসা করতে শুরু করে দেয়। আজকাল বেশিরভাগ যুবক-যুবতীরাই মোটা টাকা মাইনের চাকরি করতে আগ্রহী থাকেন যাতে সুখে ও শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারে। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক লোক এমন হয় যারা নিজেদের আলাদা চিন্তাভাবনার ইচ্ছাকে পূরণ করার জন্য মোটা টাকার চাকরি ছেড়ে দিতেও পিছু পা হন না।

 

এইভাবে তৈরি করেছেন ১০০ কোটি টাকার কোম্পানি

এই অল্প সংখ্যক লোকেদের মধ্যে একটি নাম হলো শৈলি গর্গ। তিনি ৪০ লাখ প্রতি বছরের প্যাকেজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের স্টার্টআপ শুরু করেছিলেন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার শৈলীকে অনেক বিদ্রুপ ও হাসি-ঠাট্টার স্বীকার হতে হয়েছিল। কিন্তু আজ যখন শৈলীর নাম ফোর্বস এশিয়ার টপ ৩০ সফল লোকেদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, আজ সবাই তার নামে প্রশংসার মালা গেঁথে ফেলছে।

৩০ কিমি পথ অতিক্রম করতে হতো পড়াশোনা করার জন্য

শৈলীর মা চাইতো যে শৈলী একজন ডাক্তার তৈরি হোক কিন্তু শৈলী ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন কারণ তিনি গণিতে ভালো ছিলেন। শৈলী নিজের প্রাথমিক পড়াশোনা নাসিরাবাদ থেকে করেছিলেন। পরে শৈলী আজমেরের সেন্ট মেরি কনভেন্ট স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছিলেন। এই স্কুলেই তিনি ৬ শ্রেণী থেকে ১২ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। শৈলীকে এই স্কুলে পড়তে আসার জন্য নাসিরাবাদ থেকে ৩০ কিমি পথ অতিক্রম করে আজমের আসতে হতো। তিনি ২০১৫ সালে মুম্বাইয়ের সিভিল ব্রাঞ্চে আইআইটি-র পরীক্ষা পাশ করেছিলেন।

ছেড়ে দিয়েছিলেন ৪০ লাখ টাকার চাকরি

নিজের পড়াশোনা শেষ করে শৈলি প্রথমে মুম্বাই, তারপর সিএনজি চণ্ডীগড় এবং পরে গুরগাঁওয়ে চাকরি করা শুরু করেছিলেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসে তিনি তার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তখন শৈলীর মাইনে ছিল বার্ষিক ৪০ লাখ টাকা। নিজের স্টার্টআপ শুরু করবে বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শৈলী। তিনি ছোট দেশের নির্মাতাদের রপ্তানি প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন।

এছাড়া নভেম্বর ২০২০ সালে তিনি বিয়েও করেন। তার বিয়ে হয় পাতিয়ালার বাসিন্দা অভিষেক আগরওয়ালের সাথে। বিয়ের পর স্বামীর সাথে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় শিফ্ট হন। কারণ তার স্বামী সেখানে ফেসবুকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের পর শৈলী তার কাজের থেকে মনোযোগ সরাননি বিন্দুমাত্র। তার কঠোর পরিশ্রম ফলে মাত্র দুই বছরে শৈলীর কোম্পানির টার্নওভার ১০০ থেকে ১১০ কোটিতে পৌঁছে গেছে।