Aindrila Sharma: সব্যসাচীর আবেদনে সাড়া দিয়ে ঐন্দ্রিলার আরোগ্য কামনায় নামল গোটা টলিপাড়া

আগেকার যুগের প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্ক গুলোকেই আসল ভালোবাসা বলে মনে করেন। কারণ সেই সময়ের ভালোবাসা গুলি এখনকার দিনের মতো লাভ/লোকসান দেখে হতো না, তখনকার দিনের ভালোবাসার সঙ্গী একটা গেলে আরেকটা পরিবর্তন হতো না, আগেকার দিনের ভালোবাসা গুলি এখনকার যুগের ভালোবাসার মতো খারাপ সময় ছেড়ে চলে যেত না। কিন্তু এখনকার দিনের ভালোবাসা কার সাথে থাকলে কত লাভে থাকা যাবে সেই বিচার করে হয়, একটা ছেড়ে চলে আরেকটা সঙ্গী পেতে মানুষের দুইদিনও সময় লাগে না এবং খারাপ সময় পাশে থাকা সে তো অনেক দূরের কথা। বলা যেতে পারে আজকালকার ভালোবাসা গুলো আর সেই আগেকার মতো নেই সব শুধু ব্যবসা। আর যারা সত্যি ভালোবাসে তাদের শুধু অবহেলা পেতে হয়। কিন্তু ১০০%-এর মধ্যে যখন ৯৯% লোক প্রমান করে যে ভালোবাসা আর আগের মত নিস্বার্থ ও পিওর নেই তখন কিছু ১% লোক প্রমান করে যে না আজও হয়তো সত্যিকারের ভালোবাসার অস্তিত্ব রয়েছে পৃথিবীতে। যেমন ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচী (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury)।

হ্যাঁ আপনি ঠিকই ধরেছেন আমরা বাংলা টলিউড ইন্ডাস্ট্রির (Bangla tollywood industry) দুজন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর জুটি ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury) কথা বলছি। ঐন্দ্রিলা তার কেরিয়ারের শুরু ঝুমুর সিরিয়ালের মাধ্যমে করেছিলেন এবং তারপর ধীরে ধীরে জীবনে সফলতা অর্জন করতে থাকেন তিনি। ঐন্দ্রিলা জীবন জ্যোতি, জীবন কাঠি, ফিল্ম ও ott প্রজেক্টেও কাজ করেছেন ও বর্তমানে নিজেকে ইন্ডাস্ট্রির টপ অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাম করেছেন। একইভাবে সব্যসাচী তার কেরিয়ার ‘এসো মা লক্ষী সিরিয়াল’ দিয়ে শুরু করেন এবং তারপর একের পর এক সিরিয়ালে কাজ করে জনপ্রিয় অভিনেতা হিসাবে আজ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার শেষ কাজ ছিল ‘মহাপিঠ তারাপীঠ’ যা দুর্দান্ত সফলতা অর্জন করেছিল। সব্যসাচী ও ঐন্দ্রিলার ভালোবাসার সম্পর্ক অনেক দীর্ঘ দিনের। কাজের সূত্রেই সম্পর্ক শুরু তাদের। কিন্তু আজকালকার সম্পর্কের মতো এনাদের সম্পর্কগুলো কমজোর বা মিথ্যা নয়। এই জুটি একে অপরের খারাপ পরিস্থিতে পাশে থেকেছে ও তাদের ভালোবাসা শত কঠিন পরিস্থিতে শেষ হয়ে যায়নি বরং দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ভালোবাসা যে কতটা শক্ত তা প্রমান করে দিয়েছে এই জুটি সবাইকে।

Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury

ঐন্দ্রিলা বর্তমানে একজন ক্যানসার (Cancer patients) আক্রান্ত রুগী। অভিনেত্রী দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথমবার ২০১৬ সালে ক্যানসারে (Cancer patients) আক্রন্ত হয়েছিলেন তিনি এবং ২০১৭ সালে জীবনের সাথে লড়াই করে পুরো সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসেন তিনি। সেই সময় তার জীবন-মরণ যাত্রায় প্রতিটি মুহূর্তে সব্যসাচী তার পাশে ছিল ও ঐন্দ্রিলাকে আগলে রেখেছিল। তারপর সুস্থ্য হয়ে যাওয়ার পর ঐন্দ্রিলা আবার এই রোগে আক্রান্ত হয় ২০২২ সালে কিংবা ২০২১-এর শেষে। আবার শুরু হয় চিকিৎসা ঐন্দ্রিলার। কেমোর পর কেমো চলতে থাকে অভিনেত্রীর। কিন্তু এইবার ঐন্দ্রিলার অবস্থা খুব শোচনীয়। কিছুদিন আগে কোমায় পর্যন্ত চলে গেছিলেন তিনি। ডাক্তার তাকে ভেন্টিলেশনে রেখেছিল। এখন যদিও কোমা থেকে ফিরে এসেছেন তিনি কিন্তু ঐন্দ্রিলার শরীর খুবই খারাপ। যেকোনো সময় ভালো-মন্দ ঘটে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তার প্রেমিক সব্যসাচী সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media post) ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে একটি পোস্ট করে এবং জনগণের কাছে অনুরোধ করে ঐন্দ্রিলার জন্য ভগবানের কাছে সুস্থতার প্রার্থনা করতে। তার এই পোস্ট দেখে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনা করে পোস্ট লেখে। আসুন জেনেনি সব্যসাচী ও বাংলার অন্যান্য সেলিব্রিটিরা কি পোস্ট (Social media post) করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury

সব্যসাচী ফেসবুকে লেখেন: “কোনওদিন এটা এখানে লিখবো ভাবিনি, আজ লিখলাম।
ঐন্দ্রিলার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করুন।
Pray for a miracle. Pray for supernatural.
She is fighting against all odds, beyond human.” সঙ্গে সঙ্গেই নেটমাধ্যমে ঐন্দ্রিলার দ্রুত আরোগ্য কামনায় একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তা। মনের কথা ব্যক্ত করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী-সহ অনেকেই।

অভিনেতা পরমব্রত গত মঙ্গলবার ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর একটি ছবি পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘এই ছোট্ট মেয়েটি এবং ওর সঙ্গীর জন্য প্রার্থনা করুন। ও শুরু থেকে মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমি তোমাদের দু’জনকেই ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। কিন্তু ঐন্দ্রিলা তোমার লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে চাই।’’ তিনি আরো লিখেছেন যে , ‘‘সব্যসাচী তুমি যেভাবে শুরু থেকে ওর সঙ্গে এই লড়াইতে পাশে দাঁড়িয়েছ তা সাহচর্য এবং ভালবাসার প্রতি নতুন করে বিশ্বাস তৈরি করেছে। হ্যাঁ, আমরা তোমার কথা শুনতে পেয়েছি এবং নিশ্চয়ই কোনও অলৌকিকের জন্য প্রার্থনা করব।’’

এরপর অভিনেত্রী সুদীপ্তা লিখেছেন ‘‘প্রার্থনার কি কোনও ফল পাওয়া যায়? আমি জানি না। যদি ফল পাওয়া যায় তা হলে প্রার্থনার প্রয়োজন। মন থেকে ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর জন্য প্রার্থনা করছি। এই যুদ্ধটা ওদের জিততেই হবে। একটা অলৌকিক কিছু ঘটুক। অলৌকিক তো ঘটে, তাই নয় কি?’’ পিছিয়ে নেই সুদীপ্তার দিদি বিদীপ্তা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিদীপ্তার মেয়ে মেঘলার জন্মদিন। সে কথা মনে করিয়ে কেঁদে উঠেছে মায়ের মন। বিদীপ্তা লিখেছেন, ‘‘আমারও প্রায় এই বয়সি একটা মেয়ে আছে। তার জন্মদিনে আজ মনপ্রাণ দিয়ে আমার এটুকুই প্রার্থনা, এই কঠিন লড়াই জিতে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসুক মেয়েটা। ঐন্দ্রিলার বাবা, মা আর সব্যসাচীর পাশে থেকে শুধু প্রার্থনা করছি, ওদের এই কঠিন সময় কেটে যাক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।”

এরপর গাঁটছড়া’ সিরিয়ালের  রাহুল অর্থাৎ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও এই জুটিকে নিয়ে লিখেছেন ‘‘ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে কিছুই লিখিনি ফেসবুকে। খালি মনে মনে প্রার্থনা করে গিয়েছি যেন মেয়েটা সুস্থ হয়ে ওঠে তাড়াতাড়ি। আজকে শট দিতে যাওয়ার আগে সব্যসাচীর পোস্টটা বুকে লাগল আবার। একটাই প্রার্থনা ঐন্দ্রিলা, আগেও যে ভাবে ফিরে এসেছে, এ বারও যেন সেটার পুনরাবৃত্তি হয়।’’ সব্যসাচীর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সব্যসাচীকে দেখে অবাক হয়ে যাই। ভগবান আর এদের মতন প্রেমিক বানায় না। নিঃস্বার্থ ভালবাসা কাকে বলে এরাই জানে। পাশে দাঁড়াতে এরাই জানে।

মিশমি দাসও ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে পোস্ট করে লিখেছেন। ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দুটি সিরিয়ালে কাজ করেছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে মিশমি নিজের ও ঐন্দ্রিলার ছবি পোস্ট করে স্মৃতিচারণ করে তিনি লিখেছেন ‘‘প্রতি দিন সেটে দেখা হলেও আমাদের নৈকট্য সেই অর্থে ছিল না। তবুও আমরা খুব ভাল একটা সময় কাটিয়েছিলাম। শান্তিনিকেতনে আউটডোরে গিয়ে ঐন্দ্রিলার সঙ্গে প্রথম আলাপ মিশমির। সে কথা মনে করিয় মিশমি লিখেছেন ‘‘হোটেলের একই ঘরে থাকতাম আমরা। ভোর চারটের সময় কলটাইম থাকত। কিন্তু সারা রাত আমাদের গল্প চলত। অভিনয়ের প্রতি ওর উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সে দিনই বুঝতে পেরেছিলাম।’’