লঞ্চ হতেই Super হিট Digital Rupee, প্রথম দিনেই গড়ল ২৭৫ কোটি টাকার বাম্পার লেনদেন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বপ্ন দেখেছিলেন ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ে তোলার। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়ে গেছিল তারপর থেকে। বিশেষ করে ২০২০-এর লোকডাউনের সময় থেকে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পরিকল্পনা গতি পেয়েছিল। এখন ভারতের মানুষও সব কিছু ডিজিটাল পদ্ধতি পছন্দ করে থাকে। তাই বলা যেতে পারে পিএম নরেন্দ্র মোদি তার পরিকল্পনার অনেকটাই সফলতা অর্জন করেছেন। তবে সম্প্রতি ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দিকে এক পা এগোনোর ভারতের একটি খবর বেশ আলোচনার বিষয় হয়ে রয়েছে। আসলে গত মঙ্গলবার আরবিআইয়ের (Reserve Bank Of India) ডিজিটাল মুদ্রা (Degital Currency) সিবিডিসির শুভ সূচনা হয়েছে।

একটি পাইলট প্রকল্প (pilot scheme) হিসাবে আগে শুধুমাত্র পাইকারি বিভাগে ব্যাঙ্কগুলিকে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেনের জন্য এই ডিজিটাল মুদ্রা (Digital currency) ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই পাইলট প্রকল্পে (Pilot scheme)  ৯টি ব্যাংক জড়িত। এই ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অনেকগুলি প্রথম দিনেই ডিজিটাল ভার্চুয়াল মুদ্রা ব্যবহার করে ২৭৫ কোটি টাকার মোট মূল্যের সাথে সরকারি বন্ডের সাথে জড়িত ৪৮টি লেনদেন করেছে। ডিজিটাল মুদ্রা বর্তমানে ভারতে শুধুমাত্র একটি পাইলট প্রকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই পাইলট প্রকল্পটি বেশ কয়েকটি ধাপে এগিয়ে নেওয়া হবে এবং সমস্ত ত্রুটি দূর করার পরে, প্রত্যেককে এই মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে।

Digital currency

জানিয়ে দি যে ৯ যি ব্যাঙ্ক এই পাইলট প্রকল্পের সাথে জড়িত সেই ব্যাংক গুলি হলো-স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক, আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাঙ্ক এবং এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক। এই ব্যাংক গুলি থেকে প্রথম দিনের লেনদেনের মোট পরিমান হলো ২৭৫ কোটি। এই লেনদেনের উপর ভিত্তি করে অনুমান করা হচ্ছে যে ডিজিটাল মুদ্রা আগামী দিনগুলিতে তার স্থান প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে এবং  সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে চায় তা সফলতা অর্জন করবে। অক্টোবর মাসে আরবিআই (Reserve Bank of India) ঘোষণা করেছিল যে এটি শীঘ্রই ডিজিটাল মুদ্রার বিশেষ ব্যবহারের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে আসবে।

এছাড়া আরবিআই সিবিডিসিতে একটি ধারণা নোটও জারি করেছিল, যা ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আনা হয়েছিল। এই বছরের শুরুতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর বাজেট বক্তৃতায় সিবিডিসি সম্পর্কে প্রথম ঘোষণা করেছিলেন। তিনি এই তথ্য দিয়েছিলেন যে, আরবিআই এ বছর ই রুপী আনবে। অর্থপ্রদানের এই বৈধ পদ্ধতিটি একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা নগদেও রূপান্তরিত হতে পারে। সিবিডিসি পাইলট প্রকল্প সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী ব্যাঙ্কের সিবিডিসি অ্যাকাউন্ট নামে একটি ডিজিটাল মুদ্রা অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আরবিআইয়ের।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলোতে তাদের একাউন্ট থেকে এই একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে হবে। অর্থাৎ একটি ব্যাঙ্ক অন্য ব্যাঙ্ক থেকে বন্ড ক্রয় করে, তাহলে প্রথম ব্যাঙ্কের সিবিডিসি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে এবং সেই পরিমাণ দ্বিতীয় ব্যাঙ্কের সিবিডিসি অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। এছাড়া দুই ব্যাংকের মধ্যে ডিজিটাল সেটেলমেন্টও সম্পূর্ন হবে একই দিনে।
এই পাইলট প্রকল্প সফল হলে আরবিআই অন্যান্য পাইকারি লেনদেনেও সিবিডিসির ব্যবহারের অনুমোদন দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া এটাও বলা হচ্ছে যে বর্তমানে ডিজিটাল লেনদেনের জন্য যে ক্রিপ্টোগ্রাফি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে তার বিকাশ হতে সময় লাগতে পারে।

RBI

এই পাইলট পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি কাজ সম্পন্ন হয় তবে শীঘ্রই খুচরা লেনদেনেও সিবিডিসি ব্যবহার নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হবে। এছাড়া অনুমান করা হচ্ছে যে এই মুদ্রা  খুচরো লেনদেনের মধ্যে ঢোকার পর ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। কারণ আরবিআই বরাবর এর বিরোধিতা করে। তার তাই আরবিআই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপদ মোকাবেলা করার বিকল্প হিসাবে ই রুপী চালু করার অভিপ্রায় দেখেছে৷ আর বলা হচ্ছে এই মুদ্রা  খুচরো লেনদেনের মধ্যে ঢোকার পর মানুষ মোবাইল ওয়ালেটে রুপি রাখতে পারবে।

এছাড়া জানিয়ে দি যে এই ডিজিটাল ফর্মটি যেকোনো অর্থপ্রদানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। সিবিডিসি অ্যাকাউন্টে ইলেকট্রনিক আকারে প্রতিফলিত হবে এবং মুদ্রা নোটের সাথেও বিনিময় করা যেতে পারে এটিকে। আর ইউপিআইয়ের সঙ্গে ডিজিটাল রুপি লিঙ্ক করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ডিজিটাল কারেন্সি চালু হলে সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের লেনদেন ও ব্যবসার খরচ কমবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।