মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে খাবার খাওয়ান এই ব্যাক্তি, লাখো মানুষের খিদে মেটাতে বেচে দিয়েছেন ফ্যাক্টরি

১ টাকা বিনিময় পেট ভরে খাবার খাওয়াচ্ছে প্রবীণ কুমার গোয়েল

আজকাল এমন মানুষ প্রায় দেখতেই পাওয়া যায় না যে নিজের থেকে বেশি অন্য মানুষের উপকারের কথা ভাবে ও নিজের জীবন জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর উদ্দেশ্যে। তবে আজ আমরা আমাদের এমনি এক ব্যক্তির বিষয় আলোচনা করবো। এই ব্যক্তির নাম হলো  প্রবীণ কুমার গোয়েল (Praveen Kumar goyel) । ইনি গরিব-দুঃখী মানুষদের সাহায্য করার জন্য নিজের প্রপার্টি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন। আসুন এই দয়ালু ও ভালো মানুষের বিষয় বিস্তারিত জেনেনি।

দিল্লী শহরের নাংলোইতে একটি রান্নাঘর রয়েছে এবং এই রান্নাঘরে তৈরি রান্না মাত্র ১ টাকার বিনিময় গরিবদের দেওয়া হয় (poor people get food only for 1 rupees) । এই রান্না ঘরটির নাম হলো ‘শ্রী শ্যাম রাসোই’ এবং এটিকে পরিচালনা করে প্রবীণ কুমার গোয়েল (Praveen Kumar goyel) । এই রান্না ঘরে বিভিন্ন ধরণের খাওয়ারের পদ তৈরি হয়ে থাকে। যেমন- ছোলা-ভাত, হালওয়া পুরি, মটর পনির, কারি ইত্যাদি আরো অনেজ সুস্বাদু খাওয়ারের মেনু উপলব্ধ থাকে। আর এই এতো সব খাওয়ারের মূল্য হলো ১ টাকা (Poor people get food only for 1rupees) ।

রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে প্রবীণের একটি কারখানা বা ফ্যাক্টরি ছিল যেখানে নোটবুক তৈরির কাজ হতো একদিন সে তার কারখানার কাজে যখন বাইরে গেছিলেন এবং রাস্তায় খুব তৃষ্ণার্ত বোধ করায় তিনি এক ধাবায় জল খেতে যান এবং সেখানে তিনি দেখেন যে একটি লোক হাতে ১০ টাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে যাতে সে রুটি ও আচার কিনে খেতে পারে। কিন্তু তাকে বলা হয় যে ধাবায় ১০ টাকায় কিছু পাওয়া যায় না। এই দৃশ্য প্রবীণকে খুব কষ্ট দিয়েছিল এবং সেই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি এমন একটি জায়গা তৈরি করবে যেখানে অর্থের জন্য কোনো সমস্যা হবে না এবং তিনি সবসময় গরীবদের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন।

প্রবীণ জানিয়েছেন যে এত লোককে ম্যানেজমেন্ট করা সহজ কাজ ছিল না কারণ ফ্রিতে লোকেদের খাওয়ানো অনেক কঠিন কাজ। এই কাজকে সফল করার জন্য তিনি তার ফ্যাক্টরি বিক্রি করেছিলেন এবং তার সন্তানরাও তাকে এই কাজে উৎসাহিত করেছিলেন ও তার মনোবল বৃদ্ধি করেছিলেন। প্রবীণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে তিনি দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য করবেন যাতে তাদের পেট ভরা থাকে সবসময়। এমনকি তিনি কিছু মেশিন বিক্রি করে নিজের ইচ্ছাকে শেষমেষ পূরণ করেছিলাম।

তার রান্নাঘরে হাজার হাজার মানুষের জন্য খাবার তৈরি করা হয়। এখানে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ কেজি চাল, সবজি এবং ৫০ কেজি আটা তৈরি হয়। এখানে শুধুমাত্র দরিদ্রদের খাবার খাওয়ানো হয়। সব বর্ণ ও শ্রেণির মানুষ এখানে আসে খাবার খেতে কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই। এখানে গরিব মানুষরা মাত্র ১ টাকায় পেট ভরে খাবার খেতে পারে তাও আবার তাদের পছন্দ অনুযায়ী। প্রবীণ আরো জানিয়েছেন যে তিনি একা এই রান্নাঘর চালান না দিল্লি ছাড়া আরো অনেক জায়গা থেকে এই কাজের জন্য সাহায্য পান তিনি। প্রবীণ জানিয়েছে যে মানুষ এখানে এসে রেশন দিয়ে সাহায্য করে থাকে। এ ছাড়া জন্মবার্ষিকী বা কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে মানুষ এসে রান্নাঘরে দান করে যাতে গরীবদের খাওয়ানো যায়। তাই শেষমেষ বলা যেতে পারে আজকাল স্বার্থপরদের যুগে প্রবীণ যে এমন কাজ করছে তা সত্যি প্রশংসনীয়।