জানুন কীভাবে মুম্বাইয়ের অলি গলিতে ঘুরে বেড়ানো চন্দন পেয়েছেন ‘পঞ্চায়েত’-এ বিকাশ এর মতো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ

পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজটি ওটিটি প্লাটফর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজির তালিকায় যুক্ত হয়েছে। একটি গ্রামের গ্রামের ছোট ছোট জিনিস নিয়ে খুশি থাকা ও একে অপরের সাথে খুনসুটির সম্পর্ক নিয়ে তৈরি করা এই ওয়েব সিরিজটি যেই দেখছে প্রশংসার মালা গেঁথে ফেলছে।TVT দ্বারা তৈরি করা এই ওয়েব সিরিজটি যেমন জিতেন্দ্র কুমারের মতো অভিনেতাকে নিজের দুর্দান্ত অভিনয় প্রদর্শন করার সুযোগ দিয়েছে, তেমন চন্দন রায়ের মতো অভিনেতাদের একটি পরিচয় সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে। আজ আমরা এই আর্টিকেলে পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজের সাপোর্টিং রোল প্লে করা অভিনেতা চন্দন রায়ের বিষয় আলোচনা করবো আর তার বিষয় অজানা কথা জেনে নেব।

ফিল্মি জগতের প্রতি আগ্রহ

অভিনেতা চন্দন রায় বিহারের বৈশালী জেলার মনহার ব্লকের বাসিন্ধা। ওনার জন্ম ২০ ডিসেম্বর ১৯৯৫-এ হয়েছিল। ছোট বেলা থেকেই তিনি অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি সবসময়ে স্কুল নাটকে অংশগ্রহণ করতেন। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি পাটনা চলে গেছিলেন এবং সেখানে গিয়ে তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে Bachelors in Mass Communication নিয়ে পড়াশোনা সম্পূর্ন করেছিলেন।

কলেজে পড়াকালীনও তিনি বিভিন্ন নাটকে অংশগ্রহণ করতেন। এরপর তিনি Indian Institute of Mass Communication জয়েন করেছিলেন। একটি ইন্টারভিউতে চন্দন জানিয়েছিলেন যে তিনি ” টিভি বা ভিসিআর ভাড়া নিয়ে ক্যাপ্টেন ব্যোম, চিত্রহার বা রঙ্গিলা দেখতেন। তিনি আরো জানিয়েছেন যে যখন তার বন্ধুরা ক্রিকেট খেলতেন তখন তিনি হলে গোবিন্দা, মিঠুন চক্রবর্তীর ফিল্ম দেখতে যেতেন।

চন্দনের মা চাইতেন যে তার ছেলে পুলিশের চাকরি করুক

সব মা বাবার নিজের সন্তানের থেকে অনেক আশা থাকে। তেমনি চন্দনের মায়ের আশা ছিল যে তার ছেলে যেন পুলিশের চাকরি করুক। চন্দনের পিতা যেহুত পুলিশের চাকরি করতো তাই চন্দনের মায়ের আরো বেশি পরিমাণে ইচ্ছা ছিল যে চন্দন পুলিশের চাকরি করুক। তিনি জানান যে তার মা এখনো চান যে তিনি বাড়ি ফিরে যাক আর পুলিশের চাকরি করতে শুরু করুক।

সরকারি চাকরি আর সমাজে সম্মান

চন্দন জানান যে তিনি যেরকম সোসাইটি থেকে বিলং করেন সেখানে সবাই মনে করেন যে সরকারি চাকরি যার আছে তারই সমাজে সম্মান আছে। আর সরকারি চাকরি থাকলে তবেই ভালো মেয়ে পাওয়া যাবে এবং বিয়েতে অনেক যৌতুক পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন যে তাকে খুব কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে অভিনয়ের কেরিয়ার নির্বাচন করতে গিয়ে।কারণ তার পরিবার তার সিদ্ধান্ততে খুশি নন। এমনকি চন্দনের মা এখনো চন্দনকে বলেন বাড়ি চলে আসতে কারণ বেশি বয়স হয়ে গেলে আর সরকারি চাকরি পাওয়া যাবে না। এছাড়া তার পরিবারের লোক সবসময়ে চিন্তা করতে থাকে যে তিনি ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করছেন কিনা কারণ তারা মনে করেন না যে তাদের ছেলে সেরকম কোনো বড় কাজ করছে।

এইভাবে পেয়েছিল পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজে কাজ

চন্দন জানান যে পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজে কাজ করার আগে তাকে জীবনে অনেক সংঘর্ষ করতে হয়েছিল ও অনেক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীনও হতে হয়েছিল। তিনি পঞ্চায়েত ফিল্মে কাজ পাওয়ার গল্প বলতে গিয়ে জানান যে একটা সময় ছিল যখন তিনি অন্ধেরির আরাম নগরে প্রায়ই অডিশনের জন্য চক্কর লাগাতেন। একদিন তিনি জানতে পারলেন যে ‘কাস্টিং বে’ ওয়েব সিরিজ নামের এজেন্সি কোনো একটি ওয়েব সিরিজের জন্য অডিশন নিচ্ছে। চন্দনও সেখানে অডিশন দিতে গেছিলেন। সেখানে কাস্টিং দেখা শোনা করা এক ব্যক্তি তাকে দেখার পর তার দিকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকে এবং তাকে রাত ২ টোর সময় আবার আসতে বলে। যখন চন্দন রাত ২ নাগাত অডিশন দিতে পৌঁছায় লোকটি চন্দনকে দেখে অবাক হয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসা করে যে “তুমি সত্যি এলে রাত ২ টো নাগাত অডিশন দিতে?” তারপর সেই লোকটি নিজের কথার মান রাখে এবং চন্দনের অডিশন নেয় এবং তাকে ওয়েব সিরিজের জন্য সিলেক্ট করে।