“এক দেহে দুই প্রাণ”- একজন চাকরি পেলেও দুজনেই করে কাজ

আজ আমরা আপনাদের কে পাঞ্জাবের এমনই দুই ভাইয়ের কথা বলতে চলেছি, যাদেরকে বলা হয় এক দেহ এবং দুই প্রাণ। এই দুই ভাই জন্ম থেকেই একে অপরের সাথে শারীরিকভাবে সম্পর্কযুক্ত, যার কারণে তাদের এক দেহ এবং দুই জীবন বলা হয়। কিন্তু শারীরিকভাবে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকা সত্ত্বেও, তারা একে অপরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সমর্থন করে কিভাবে জীবনযাপন করে তা জানতে সকলেই আগ্রহী।

সোহন এবং মোহন, যারা পাঞ্জাব স্টেট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (PSPCL) এ কাজ করে, তারা যমজ ভাই, যারা উপরের পিঠ থেকে অপরের সাথে সংযুক্ত। সোহন ও মোহনের মাত্র দুটি পা, তাই অপারেশন বা অন্য কোনো চিকিৎসার মাধ্যমে এই দুই ভাইকে আলাদা করা যাবে না। শারীরিকভাবে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকার কারণে, সোহন এবং মোহনকে ‘দো জিসম এক জান’ বলা হয়, কারণ এই ভাইরা একে অপরের পরিপুরক হয়ে কাজ করে।

সোহন পাঞ্জাব স্টেট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করন, কিন্তু সোহনের ভাই মোহনও তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন। এই চাকরির জন্য সোহনাকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়, যদিও সোহনার পদমর্যাদা ও বেতন ২ বছরের জন্য বাড়ানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। সোহন ও মোহন বাড়ি থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য একটি যানবাহনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছেন, যার অধীনে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে তাদের জন্য শীঘ্রই পরিবহন ব্যবস্থা করা হবে।

সোহন এবং মোহন ১৪ জুন ২০০৩ তারিখে দিল্লির সুচেতা কৃপলানি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তাদের বাবা-মা শারীরিক সমস্যার কারণে ভাইদের তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকার করেছিলেন। তাই, সোহন এবং মোহনকে অমৃতসরের পিঙ্গলওয়াড়া দত্তক নিয়েছিলেন। সোহন ও মোহন বেশিদিন বেঁচে থাকবে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন।

অবশ্য এই দুই ভাই শুধু ভাগ্য ও পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেই জীবন যাপন করেননি, পড়াশোনা করে বিদ্যুৎ বিভাগে চাকরিও পেয়েছেন।

সোহনা এবং মোহনা বুকের নীচের অংশ দ্বারা সংযুক্ত, যার কারণে তাদের মাথা, বুক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এবং মেরুদন্ড আলাদা। কিন্তু সোহনা ও মোহনার শরীরে কিডনি, লিভার ও ব্লাডার একটি মাত্র রয়েছে, যার কারণে এই দুই ভাই একে অপরকে জীবন যাপনে সাহায্য করে। যদিও সরকারের দৃষ্টিতে সোহন ও মোহন দুজন আলাদা ব্যক্তি, যাদের আধার কার্ড থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি নথি আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, দুই লাখ শিশুর মধ্যে মাত্র একজন শিশু এভাবে শারীরিকভাবে যুক্ত হয়, যার মধ্যে রয়েছে সোহন এবং মোহন।