সিনেমার ন্যায় ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নীতা আম্বানি কে প্রপোজ করেছিলেন মুকেশ আম্বানি, আর তারপর..

ভারত ও এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন শিল্পপতি (businessman) মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। শুধু তাই নয় মুকেশ আম্বানির (Mukesh Ambani) নাম গোটা পৃথিবীর ১০ জন সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৭ নম্বরে রয়েছে। বলা যেতে পারে মুকেশ আম্বানি এই পৃথিবীর ধনী ও বিখ্যাত শিল্পপতিদের (Business man)মধ্যে অন্যতম। এছাড়া জানিয়ে দি মুকেশ আম্বানি ও তার পরিবার প্রায় তাদের ব্যবসা, ব্যক্তিগত জীবন ও বিশেষ করে লাক্সারি জীবনযাপনের জন্য আলোচনার বিষয় হয়ে থাকে। বিশেষ করে মুকেশ আম্বানির স্ত্রী প্রায় আলোচনার বিষয় হয়ে থাকেন। বলা যেতে পারে পৃথিবীতে এমন কোনো লাক্সারি বস্তু নেই যেটা আম্বানি পরিবারের কাছে নেই। সবচেয়ে দামি বাড়ি থেকে শুরু করে সবচেয়ে দামি গাড়ি পর্যন্ত সবকিছুই রয়েছে আম্বানি পরিবারের কাছে।
তবে আপনি কি জানেন মুকেশ আম্বানি ও তার স্ত্রীর একটি টক-মিষ্টি লাভ স্টোরি রয়েছে? এই লাভ স্টোরির সামনে ফিল্মে দেখানো লাভ স্টোরির গল্প গুলিও ফেল। জানিয়ে দি যে নিতে আম্বানি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিল, যাকে মুকেশের পিতা ধীরুবাই আম্বানি মুকেশের জন্য পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু খুব কম লোকই জানেন যে নিতা আম্বানি বিয়ের আগে মুকেশ আম্বানির কাছে একটি শর্ত রেখেছিল এবং তারপর বিয়ের জন্য রাজি হয়েছিলেন তিনি।
১৯৮৫ সালের ৮ই মার্চ মুকেশ আম্বানি ও নীতা আম্বানি একসাথে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন।নিতা আম্বানি একটি সাক্ষাতকারে জানিয়ে ছিলেন যে মুকেশের বাবা ধীরুবাই ও মাতা কোকিলা বেন নিতাকে একটি নাচের অনুষ্ঠানে দেখেছিলেন। তাদের নিতার নাচ খুব ভালো লেগেছিল। তারপরে ধীরুবাই, নিতার বাড়িতে পরের দিনল ফোন করেছিলেন এবং নিতার সঙ্গে মুকেশের বিয়ের প্রস্তাব রেখেছিলেন। এটি নিতার পরিবারের জন্য খুব আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল যে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তাদের ফোন করেছে। প্রথমে যখন ধীরুবাই আম্বানি ফোন করেছিলেন তখন ফোনটি নিতা ধরেছিলেন এবং তিনি বিশ্বাস করেননি যে সত্যি এতো বড় ব্যবসায়ী তাকে ফোন করেছে। নিতা ভেবেছিলেন কেউ তার সাথে মজা করছে। তাই ধীরুবাই আম্বানি যখন বলেছিলেন যে ‘হ্যালো আমি ধীরুবাই আম্বানি বলছি’ তার উত্তরে ধীরুবাই আম্বানি বলেছিল ‘রং নাম্বার’ এই বলে তিনি ফোন কেটে দিয়েছিলেন।
এরপর দ্বিতীয়বার যখন আবার ধীরুবাই আম্বানি কল ব্যাক করে বলেছিলেন যে আমি ধীরুবাই আম্বানি বলছি, তখন নিতাও রেগে গিয়ে বলেছিলেন যে ‘আচ্ছা তাহলে আমি এলিজাবেথ টেলর বলছি’। এই বলে নিতা ফোন কেটে দিয়েছিলেন। এরপর যখন তৃতীয়বার ধীরুবাই ফোন করেছিলেন তখন নিতার বাবা ফোন ধরেছিলেন এবং কথা বলার পর নিতার বাবা বুঝতে পেরেছিলেন যে সত্যি ধীরুবাই আম্বানি ফোন করেছে। তারপর নিতার বাবা নিতাকে ডেকে বলেন যে ‘সত্যি ধীরুবাই আম্বানি ফোন করেছে তাই তুমি ওনার সাথে নম্র ভাবে কথা বলো’। এরপর নিতা ফোন করে ধরে ‘জয় শ্রী কৃষ্ণা’ বলেন। তখন ধীরুবাই নিতাকে তাদের অফিসে আমন্ত্রন জানায়।
এরপর নিতা ও তার পিতা যখন মুকেশ আম্বানির অফিসে যায় তখন ধীরুবাই আম্বানি নিতাকে সে কি কাজ করে, নিতার ইন্টারেস্ট ইত্যাদির বিষয় জিজ্ঞাসা করে। এইসবের বিষয় জানার পর ধীরুবাই নিতাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে নিতা তার ছেলে মুকেশকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক কিনা এবং সে মুকেশের সাথে দেখা করতে চায় কিনা। তারপর যখন নিতা সম্মতি জানিয়েছিল তখন ধীরুবাই নিতাকে আম্বানি হাউসে পাঠিয়ে দিয়েছিল। দরজা খোলার পর সাধা শার্ট ও ব্যাক প্ল্যান্ট পরে মুকেশ আম্বানি নিতাকে স্বাগত জানিয়েছিল ও বলেছিল যে ‘হাই… এম মুকেশ আম্বানি’। তারপর একবছর তারা একে-অপরকে ভালো করে চেনার জন্য মেলামেশা করেছিলেন। ৬/৭ মাস পর্যন্ত নিতা খুব লজ্জা পেতেন মুকেশের সামনে যেতে।
একবার নীতা এবং মুকেশ গাড়িতে করে মুম্বাইয়ের পেডার রোড ছেড়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাস্তায় যানজট ছিল। সিগন্যালে গাড়ি থামলে মুকেশ নীতাকে ফিল্মি ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?”
– নীতা লজ্জায় মুখ নিচু করে মুকেশকে গাড়ি চালাতে বলল। সিগন্যাল খুলে গেল এবং পেছন থেকে বেশ কয়েকটি গাড়ি হর্ন বাজছিল, কিন্তু মুকেশ বললেন, “আপনি উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত আমি গাড়ি চালাব না।” এসময় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তারপর নীতা উত্তর দিল, “হ্যাঁ.. আমি করব.. করব।”