ছিল না মাথার উপর ছাদ টুকুও ফুটপাতে কাটতো জীবন, সেখান থেকে আজ বলিউডের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী

মাথার ছাদটুকু ছিল না ওই অভিনেত্রীর

একটা সময় যারা শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন, তাদের অনেকেই আজ প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেছেন। পরিশ্রম এবং সততা দিয়ে নিজেদের জনপ্রিয় করে তুলেছেন। আজ দেশের মানুষ তাদেরকে হৃদয়ে জায়গা দিয়েছেন। আজ এরকমই এক তারকার (Celebrity) কথা বলবো, যিনি একটা সময় প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। তাঁর থাকার কোন জায়গাও ছিল না, আজ তিনি নাম, খ্যাতি ও সম্পত্তি সবই অর্জন করেছেন। তিনি হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।

 

 

অভিনেত্রী মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) জন্ম সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে। তিনি B.SC করেছেন রসায়ন নিয়ে। তিনি পুনেতে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াতে ( Film And Television Institute of India) যোগদান করেন। কিন্তু তাঁর বাড়িতে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। একটি দুর্ঘটনায় তাঁর ভাই মারা যায়। তিনি তখন কলকাতায় ফিরে আসেন। মিঠুন নকশাল রাজনীতিতে খুবই সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু তিনি এটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এরপর তিনি মুম্বাইতে (Mumbai) তাঁর ক্যারিয়ার বানানো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

 

 

তিনি শারীরিকভাবে যথেষ্ট ফিট ছিলেন। তবে তাঁর গায়ের রং নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাস কম পেতেন। তবে নায়ক (Actor) হওয়ার স্বপ্ন তিনি দেখতেন। অভিনেতা নিজেই জানিয়েছেন, ‘ আমি ভালো নাচতাম এবং মার্শাল আর্টও জানতাম। তাই সবসময় ভাবতাম এমন কিছু করা উচিত যাতে মানুষের নজর আমার গায়ে না যায়। ক্যারিয়ারে ব্রেক পেয়েছিলাম যেমনি, তেমনি লিড রোলও পেয়েছিলাম। আমার প্রথম চরিত্রটি ছিল আদিবাসীর। সেই লুকটি আমার চরিত্রের সাথে মানানসই ছিল।”

 

 

এক সাক্ষাৎকারে মিঠুন চক্রবর্তী এও বলেছিলেন, ‘ একটা সময় ছিল আমি ফুটপাতে থেকেছি। মুম্বাই শহরের যে কোন জায়গায় ঘুমিয়েছি। আমার এক বন্ধু আমাকে মাতুঙ্গা জিমখানার মেম্বারশিপ করে দিয়েছিল, যাতে সকালে বাথরুম ব্যবহার করতে পারি। তখনই আমি স্নান সেরে নিতাম। কোথায় খাবার পাব বা কোথায় ঘুমাতে পারবো, তা আমার জানা ছিল না। আমার এরকম চিন্তাও এসেছিল, হয়তো আমাকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় ফিরে যেতে হবে। ‘

 

১৯৭৬ সালে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘ মৃগয়ার ‘ জন্য তাকে জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছিল। তবে ১৯৭৯ এবং ১৯৮০ দশকে তিনি সত্যিকারের সাফল্য পেয়েছিলেন, যা তাঁকে সুপারস্টার করে তুলেছিল। তাঁর প্রথম সুপার হিট ছবি ছিল ‘ সুরক্ষা ‘। এরপর তিনি একের পর এক সুপারহিট ছবি করতে থাকেন – ‘ ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘কসম পানে ওয়াল কি’, ‘পেয়ার ঝুকতা না’, ‘পেয়ারি বেহনা’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’ ইত্যাদি। তাঁর সিনেমা সেসময় রমরমিয়ে চলত।

 

হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রাথমিকভাবে সকল ক্যারিয়ার করে নিয়ে, তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। সিনেমায় এবং শিল্পকলার সম্পর্কিত সমস্ত সংস্থায় তিনি নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। টিভিতে ‘ ড্যান্স বাংলা ড্যান্স, ড্যান্স ইন্ডিয়া গ্রান্ডমাস্টার ‘ প্রভৃতিতে প্রধান ভূমিকায় থাকতে শুরু করেন। এরপর ২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভার সংসদ হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ২০২১ সালে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন।

অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী যোগিতাকে। তাঁদের ৪ সন্তানও রয়েছে। বড় ছেলে মিমো চক্রবর্তী অভিনয় নিজেকে চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি এখনো পর্যন্ত ইন্ডাস্ট্রিতে কোন জাদু দেখাতে পারেননি।