বিড়ালছানা ভেবে চিতা বাঘের বাচ্চাকে বাড়ির খামারে নিয়ে আসে এক শিশু, আর তারপর….

ছিল বিড়াল হয়ে গেল বাঘ!- এই প্রবাদটি হয়ত অনেকই শুনে থাকবেন। কিন্তু সত্যিই এবার এরকম কিছু ঘটনার সাক্ষী হল মহারাষ্ট্রের একটি ছোট্ গ্রাম। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, সেখানকার স্থানীয় কিছু বাচ্চা খেতে খেলাধুলা করছিলো, এমনসময় হঠাৎই তাদের নজরে পড়ে একটি বিড়াল ছানা।

ছানাটিকে খুঁজে পাওয়া মাত্রই সেটাকে বাড়িতে নিয়ে হাজির হয় ক্ষুদে শিশুরা এবং সেই বিড়ালছানা হয়ে ওঠে তাদের খেলার সাথী। বিড়াল বলে পরিবারের বড়রাও কোনোরকম আপত্তি জানায়নি তাতে। এমনকি তারাও বিড়ালটির যথেষ্ট যত্ন-আত্তি করেছিলেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল, তাদের সন্দেহ ক্রমশ বাড়তে থাকে। পরে তারা জানতে পারেন বিড়াল নয় বরং চিতা বাঘের ছানা তুলে নিয়ে এসেছে ছোট্ট শিশুর দল।

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে। তথ্য অনুযায়ী, ওই গ্রামে সাহেবরাও গঙ্গারাম ঠাকরের, মরজার এলাকায় বাড়ির পাশের মাঠে একটি ছোট বেড়াল ছানা খুঁজে পেয়েছিল শিশুরা। বিড়ালটি দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ বিড়ালের মতো ছিল না। তার গায়ের রং ছিল একদম অন্যরকম এবং সেটি খুবই সুন্দর দেখতে ছিল। কৃষকের ছেলেরা তার সাথে খেলতে থাকে এবং পরে তারা বাড়িতেও নিয়ে এসে রাখে। কিছুদিন তারা বাড়িতেই রাখে বিড়ালছানাটিকে। পরে যখন কৃষকের পরিবার জানতে পারে যে এটি কোনো বিড়ালছানা নয়, বরং ভয়ানক একটি চিতাবাঘের বাচ্চা ,তখন তারা রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন।

জানা গেছে গ্রামের বাসিন্দা, সাহেবরাও ঠাকরের বাড়ির কাছে একটা আখের ক্ষেত রয়েছে। কাছাকাছি কিছু বড় গাছও রয়েছে। সেখানেই শিশুরা প্রথমবার বিড়ালের মতো দেখতে চিতার শাবকটিকে খুঁজে পায়। ঠাকরে জানিয়েছিলেন “সব বাচ্চারা ছানাটিকে দেখতে পেয়ে বলতে লাগল যে এটা একটা বিড়ালছানা। আমি গিয়ে দেখি চিতাবাঘের বাচ্চার মতো দেখতে। এরপর সবাইকে ঘরে থাকতে বলি। কারণ শাবকের মা অর্থাৎ স্ত্রী চিতাবাঘটি বাচ্চার খোঁজে আখ ক্ষেতে চলে এসে আক্রমণ করতে পারত। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরেও মা চিতাবাঘটি আসেনি।”

তিনি জানান, প্রথমদিকে বাচ্চারা যখন খেলতো তখন চিতাবাঘটি চুপ করে বসে তাদের দেখত। এভাবে ২-৩ পরে চিতাটিও বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে শুরু করে। চিতার শাবকটি কখনো খামারের দিকে যেত, আবার বাড়ির দিকে ফিরে আসতো। বিড়াল মনে করে পরিবারের সদস্যরাও তাকে দুধ, রুটি ইত্যাদি জিনিস খেতে দিচ্ছিলেন। কিন্তু বিড়ালের হাবভাব সুবিধের মনে হয়নি পরিবারের লোকেদের। ঠাকরে আরও বলেছিলেন, খেলার সময় তার দু বছর বয়সী নাতনিকে সেই চিতাবাঘ কামড়ে দিয়েছিল। এরপর আর দেরি করেননি পরিবারের লোকজন। তারা সিদ্ধান্ত নেন বনবিভাগের হাতে শাবকটিকে তুলে দেবেন। সেইমতো তারা বনবিভাগে খবর পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর বনবিভাগের দল এসে সেই চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে নেন।