জনি ডেপের মোট সম্পত্তির কাছে পাত্তা পাবেনা মুকেশ আম্বানিও এক একটি ফিল্মের জন্য নেন ১৫৫ কোটি টাকা

হলিউডের বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় তারকা জনি ডেপ(Johnny depp)। যিনি ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর ‘জ্যাক স্প্যারো’ চরিত্রটির জন্য সুপরিচিত। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং খুব ভালো সংগীতশিল্পী। জনি ডেপ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কারও জিতেছেন। তবে অভিনেতাকে আজকাল খবরের শিরোনামে থাকতে দেখা যাচ্ছে। কারণ তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ড(Amber Heard)-এর বিরুদ্ধে আনা মানহানি মামলায় জয়ী হয়েছেন এই হলিউড তারকা। সেইসঙ্গে দীর্ঘদিন পর তিনি আবারও তাঁর হারানো গৌরব ফিরে পেয়েছেন।

জনি ডেপের জন্ম ১৯৬৩ সালের ৯ ই জুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, ওয়েন্সবরো শহরে হয়েছিল। বরাবরই জনি ডেপ জীবনে অনেকরকম বাধা এবং চড়াই অতরাইয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। জনির বয়স যখন মাত্র ১৫ বছর তখন তার বাবা-মার ডিভোর্স হয়ে যায়। পরে তাঁর মা রবার্ট পামারের সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। সেসময় পারিবারিক চাপের কারণে জনি নিজের শরীরে ক্ষত সৃষ্টি করতেন। এপ্রসঙ্গে তিনি একবার বলেছিলেন যে তাঁর শরীরের প্রতিটি ক্ষত চিহ্ন এক একটি গল্প বলে।

জনির মা তাঁকে ১২ বছর বয়সে একটি গিটার কিনে দিয়েছিলেন এবং সেটা তিনি বিভিন্ন ব্যান্ডে বাজানো শুরু করেন। এরপর ১৯৭৯ সালে ১৬ বছর বয়সে মাঝপথেই হাই স্কুল ছেড়ে দেন রক মিউজিশিয়ান হওয়ার জন্য । কিন্তু আবারও তিনি স্কুলে ফিরতে চেয়েছিলেন কিন্তু প্রিন্সিপাল তাঁকে তাড়িয়ে দেন। এরপর ১৯৮০সালে, ডেপ ‘দ্য কিডস’ নামে একটি ব্যান্ড শুরু করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় সাফল্য পেলে এই ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে ‘সিক্স গান মেথড’ রাখেন তিনি। এরপর কুড়ি বছর বয়সে ‘লস এঞ্জেলেস’ চলে আসেন এবং আশির দশকের টিভি সিরিজ ‘২১ জাম্প স্ট্রিটের’ মাধ্যমে ডেপ তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ‘এডওয়ার্ড সিজরহ্যান্ডস’ চলচ্চিত্রের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক প্রসংশিত হন। এরপর ‘স্লিপি হলো’, ‘চার্লি এন্ড দ্য চকোলেট ফ্যাক্টরী’, ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ , ‘র‍্যাঙ্গো’ এবং ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর মত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বিশাল সফলতা পান।

২০১৫ সালে, ফেব্রুয়ারী মাসে জনি ডেপ এবং অ্যাম্বার হার্ডের বিবাহ হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে নানান সাংসারিক ঝামেলার সূত্রপাত হয় এবং একবছর পর তাঁরা আলাদা হয়ে যান। তবে এখানেই তাঁদের সাংসারিক দ্বন্দ্বের ইতি ঘটেনি। এরপর ২০১৮ সালে অ্যাম্বার তাঁর স্বামী জনির বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে জনি তাঁকে মারধর করতেন বলে জানান। যার পর জনি ডেপকে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। এমনকি ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান’ এবং ‘ফ্যানটাস্টিক বিস্টস’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় জনিকে। এছাড়া বিভিন্ন বিজ্ঞাপন থেকেও বাদ পড়েন অভিনেতা।

এরপর বাধ্য হয়েই জনি হার্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তিনি হেরে যান। এরপর হার্ডও জনির বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানির মামলা করেছিলেন যেখানে তিনি গার্হস্থ্য সহিংসতা, লাঞ্ছনা, যৌন নিপীড়ন ইত্যাদি গুরুতর অভিযোগ আনেন। তবে এবার সেই মামলা নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে চলা আদালতের শুনানির পর আসল সত্যিটা সামনে এসেছে। যেখানে অ্যাম্বারকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারকরা। সেইসঙ্গে প্রাক্তন স্বামীকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে $ ১৫ মিলিয়ন ডলার বা ১১৬ কোটি টাকা দিতে হবে অ্যাম্বারকে।