কখনো ভিক্ষা চেয়ে কখনো নেচে টাকা উপার্জন করতেন জোয়িতা মন্ডল, আজ হলেন দেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার বিচারপতি

আমরা প্রায় রাস্তা ঘাটে ট্রান্সজেন্ডারদের নাচ-গান-তামাশা-তামাশা করে পয়সা রোজগার করতে দেখি। এদের জন্য আইনি-সুযোগ সুবিধা থাকলেও সমাজের তুচ্ছ-তাছিল্লার কারণে ট্রান্সজেন্ডাররা পড়াশোনা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পায়না যার কারণে তাদের কাছে ভিক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার জোয়িতা মন্ডল সমাজের তুচ্ছ-তাছিল্লা সত্ত্বেও জীবনে সফল হয়ে দেখিয়েছে এবং ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার জজ হয়েছেন। আসুন সংক্ষেপে জেনেনি ট্রান্সজেন্ডরার জজ জোয়িতা মন্ডলের গল্প।

জোয়িতা প্রথম থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন।প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকজন তাকে নিয়ে খুব তুচ্ছ-তাছিল্লা করতো। যখন এই তুচ্ছ-তাছিল্লা তার সহ্যের বাইরে চলে গেছিল তখন তিনি পড়াশোনা ছেড়ে সামাজিক কাজ করতে শুরু করেছিলেন। তিনি লোকেদের ন্যায় পাওয়ার জন্য সাহায্য করতে শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি বিপিও-তেও চাকরি করা শুরু করেছিলেন কিন্তু সেখানেও সবাই তাকে তুচ্ছ-তাছিল্লা করতো যার কারণে তিনি সেখানের চাকরিও দুই মাসের মাথায় ছেড়ে দিয়েছিলেন।

 

২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয় জেন্ডারকে মান্যতা দিয়ে দিয়েছিলেন। যার পরে ট্রান্সজেন্ডারদের অবস্থায় এখন অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। কোর্ট সরকারি চাকরি ও কলেজেও ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য কোটা সুনিশ্চিত করেছেন। ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের একটি বিল এখনো সংসদে বাকি রয়েছে। লোক আদালতে সাধারণত একজন সিনিয়র বিচারক, একজন আইনজীবী এবং একজন সমাজকর্মী নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় প্যানেল থাকে। জোয়িতা একজন সমাজকর্মী হিসেবে,একজন বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

 

জয়িতা জানিয়েছেন যে তার সহকর্মী বিচারকরা তার সাথে খুব সহযোগিতা করেন এবং তার সাথে সম্মানের সাথে আচরণ করেন। তবে এখনও কিছু লোক আছেন যারা তাকে অদ্ভুত চোখে দেখেন। তিনি জানিয়েছেন যে কেউ কেউ তো তাকে জজ হিসাবে দেখে চমকে পর্যন্ত যায়। জোয়িতার মতে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হতে এখনো অনেক সময় লাগবে।