মায়ের বকুনিতেই কাবু!পরম মমতায় ৬ টি বাঘ ছানাকে বড় করেছে এই কুকুর
সোশ্যাল মিডিয়ার (Social media) সাথে জুড়ে নেই এরকম মানুষ নেই বললেই চলে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াকে আজকাল বিভিন্ন কারণে ব্যবহার করে থাকি। যেমন কেউ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যবসার কাজের জন্য, জিনিস কেনা-বেচার, কেউ সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েক করে উপার্জন করে আবার কেউ কেউ শুধু এন্টারটেন্টমেন্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। আর এন্টারটেন্টমেন্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা লোকেদের সংখ্যাই একটু বেশি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media) আমরা রোজই অনেক ধরনের ফটো, ভিডিও ও খবর দেখতে পাই। এই সব ভিডিওর মধ্যে কিছু কিছু ভিডিও বা খবর এমন থাকে যা দেখার পর আমরা অবাক হয়ে যাই বা এমন কিছু দেখতে পাই তা দেখে আমাদের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যায় বা এমন কিছু দেখি যা আমাদের মনকে খুশি করে তোলে।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনি একটি মনকে খুশি করে দেওয়া ভিডিও ভাইরাল (Viral video) হচ্ছে যা দেখলে আপনার ভালো লাগবে তার সঙ্গে আপনি কিছুটা অবাকও হবেন। আসুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এই ভিডিওর বিষয় বিস্তারিত জেনেনি।
আমরা আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অনেক প্রাণীদের মধ্যে বন্ধুদের মতো ভাব দেখতে পাই যারা এতদিন আমরা এটাই জেনে এসেছি যে এরা একে অপরের শত্রু হয়। যেমন কুকুর বেড়াল, বেড়াল ইঁদুর, কুকুর পাখি, বাঘ মানুষ, বাঘ বেড়াল ও বাঘ কুকুর। বর্তমানে বাঘ ও বেড়ালের এমন এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল (viral video) হচ্ছে যা দেখলে আপনার মন খুশি হয়ে যাবে ও তার সাথে আপনি কিছুটা অবাক হয়ে যাবেন। ভিডিওতে একটি মমতাময়ী মা কুকুরকে দেখা যাচ্ছে যে অনেক গুলি বাঘের বাচ্চাকে নিজের দুধ পান করাচ্ছে। কি অবাক হলেন ? বিশ্বাস হচ্ছে না? কিন্তু জানিয়ে দি এই ঘটনা সত্যি। এই ঘটনাটি চীনের এক চিড়িয়াখানার দৃশ্য। আসুন এই মা কুকুর ও বাঘের বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর বিষয়টি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জেনেনি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি কুকুরের দিকে এগিয়ে আসছে একাধিক অতিকায় বাঘ। ওজন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ কেজির কাছাকাছি। কুকুরের ঘাড়ের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে যাচ্ছে সে। এই বুঝি কামড় বসাল কুকুরের (retriever dog) ঘাড়ে। কিন্তু এ কী! কামড়ানোর বদলে কুকুরটিকে (Retriever dog)আদর করতে শুরু করল বাঘটি (tiger)। কিন্তু বাঘটি (tiger) কাছে যেতেই বিরক্ত হয়ে গর্জে উঠল কুকুরটি। সেই ডাকে বাঘের ‘হালুম’ও জব্দ হয়ে গেল। জানিয়ে দি যে চীনের এই চিড়িয়াখানায় একটি বাঘের খাঁচার মধ্যে দিব্যি হেঁটেচলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে একটি কুকুরকে। এই কুকুরটি রেটরিভার জাতের কুকুর। প্রথম এই বিষয় জানার পর সকলের মনে প্রশ্ন উঠেছিল যে বাঘ ঘুলি কেন কুকুরটিকে আক্রমণ করছে না?” কেন আক্রমণ করার পরিবর্তে আদর করছে কুকুরটিকে। গলা জড়িয়ে মাথাও ঘষতে দেখা গিয়েছে তাদের।
এই ঘটনার রহস্য তখন ফাঁস হয় যখন ওই চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানান যে এই কুকুরটিকে মা মনে করে বাঘ গুলি। আসলে এই চিড়িয়াখানায় থাকা এক বাঘিনী ৬ টি বাচ্চাকে জন্ম দিয়েছিলেন। আর জন্ম দেওয়ার পর সেই বাঘিনী নিজের ছানা গুলিকে ছেড়ে পালিয়ে গেছিল। ছানা গুলিকে কি করে বাঁচাবে এইভেবে রাতের ঘুম উড়ে গেছিল চিড়িয়াখানার কর্মীদের। কারণ তখন মায়ের দুধ না পেলে এই বাচ্চা গুলির বাঁচা অসম্ভব ছিল। তখন কর্মীরা সিদ্ধান্ত নেয় যে বাঘের ছানা গুলিকে কুকুরের কাছে বড় করবে ও কুকুরের দুধ তাদের খাওয়াবে। আর যখন ছানা গুলি পূর্ণবয়স্ক হয়ে যাবে তখন কুকুরটিকে খাঁচা থেকে সরিয়ে দেবে ভেবেছিল কর্মীরা। কারণ মাংসের স্বাদ পাওয়ার পর যদি কুকুরটিকে মেরে ফেলে বাঘ গুলি সেই ভয়ে।
এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছিল। গোল্ডেন রিট্রিভার প্রজাতির একটি কুকুরকে খাঁচার ভিতরে রেখে দিয়েছিলেন তাঁরা। গোল্ডেন রিট্রিভারটির কাছেই বড় হয়ে উঠেছে বাঘগুলি। শাবকগুলিকে যত্নে লালন পালন করেছিল সেই কুকুর মা। এরপর বাঘগুলি পূর্ণবয়স্ক হয়ে গেলে খাঁচা থেকে কুকুরটিকে বার করে দেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। যদি কুকুরটিকে বাঘগুলি খেয়ে ফেলে, সেই ভয়েই কুকুরটিকে খাঁচা থেকে সরিয়ে ফেলেন তাঁরা। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়। কুকুরটিকে সরিয়ে দেওয়ার পর বাঘগুলি বিমর্ষ হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ সময় মনখারাপ করেই বসে থাকত বাঘগুলি। পরীক্ষা করার জন্য আবার কুকুরটিকে খাঁচার মধ্যে পাঠিয়ে দেন কর্মীরা। তাদের কুকুর মাকে খাঁচায় পেয়ে খুশিতে নেচে উঠেছিল বাঘের ছানা গুলি। যেন মা কুকুরকে পেয়ে তাদের শরীরে প্রাণ ফিরে পেল তারা। এই দৃশ্য দেখে চিড়িয়াখানার কর্মীরা বলছেন যে বাঘগুলির কাছে রক্তের চেয়ে মাতৃত্বের স্বাদ বেশি।