নকলের বদলে আসল কঙ্কাল ব্যবহার করে করা হয়েছিল শুটিং সেটে! আর তারপরেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু ঘটে ৫ সদস্যের

আমরা সকলেই জানি হলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি (Hollywood film industry) গোটা বিশ্বে সবচেয়ে উন্নতমানের ফিল্ম তৈরি করে থাকে। বিশেষ করে হলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হরার ফিল্ম (Horrar film) গুলি গোটা বিশ্বের দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়। আজ আমরা এই আর্টিকেলে এমনি একটি হলিউড (Hollywood film industry) হরার ফিল্ম (Horrar film) নিয়ে আলোচনা করবো যেটি অনেক উন্নতমানের ফিল্ম ছিল ও এই ফিল্মটিকে জনগণ দ্বারা খুব পছন্দ করা হয়েছিল। কিন্তু এই ফিল্মের মেকিংয়ের সাথে জড়িত রয়েছে অনেক ধরনের ঘটনা ও রহস্য যা জানার পার আপনার পায়ের তলা দিয়ে মাটি সরে যেতে পারে। আসুন এই আর্টিকেলের ম্যাধ্যমে এই বিষয় বিস্তারিত জেনেনি।

poltergeist

আশির দশকে টোব হুপার পরিচালিত ‘পোল্টারগেইস্ট’ ফিল্মটি ‘হরর’ ঘরানার সুপারহিট ফিল্মগুলির মধ্যে অন্যতম। ছবিটি যেমন দর্শকমহলে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করেছিল, তেমনই ছবি তৈরির নেপথ্যেও ছিল রহস্য। এই ফিল্মে ডায়ান ফ্রিলিংয়ের চরিত্রটিতে ছিলেন অভিনেত্রী জোবেথ উইলিয়ামস। ফিল্মে একটি সিনে দেখানো হয়েছিল যে একটি অলৌকিক শক্তি ডায়ান ফ্রিলিংকে টেলে সুইমিং পুলের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু ডায়না সেটা থেকে বেঁচে পালিয়ে তার বাচ্চাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সেই অলৌকিক শক্তি ডায়ানকে টেনে একটি কঙ্কালে ভরা জায়গায় এনে ফেলেছিল। শুটিংয়ের সময় সবাই জানতেন এই কঙ্কাল গুলি নকল কিন্তু ফিল্ম মুক্তির পরে সবাই জানতে পেরেছিল যে ফিল্মের শুটিং আসল কঙ্কালের দ্বারা করা হয়েছিল।

poltergeist

 

এই ফিল্মের মেকিং সদস্যরা জানিয়েছিলেন যে সেইসময় নকল কঙ্কাল এত সহজে কিনতে পাওয়া যেত না। আর এই নকল কঙ্কালের দামও ছিল প্রচুর। তাই প্রোডাকশন হাউস আসল কঙ্কাল বিক্রি করে এমন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এই কঙ্কালগুলি মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষামূলক গবেষণা করার জন্য বিক্রি করা হত। ফিল্ম মুক্তির পর অভিনেত্রী ডায়ান জানান যে তাঁকে টানা চার-পাঁচ দিন কঙ্কালের মধ্যেই শ্যুটিং করতে হয়েছিল। আর যখন তিনি পরে জানলেন যে কঙ্কাল গুলি আসল কঙ্কাল ছিল তখন তিনি রীতিমত ভয় পেয়েছিলেন। তবে আশ্চর্যের বিষয় যেটি ঘটেছিল সেই সময় তা হলো শ্যুটিং চলাকালীন কিছু না হলেও ছবি মুক্তির আগে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় কর্মীদলের পাঁচ সদস্যের। আর এক সদস্যও মৃত্যুর হাত থেকে কোনও রকমে বেঁচে ফেরেন। সকলের মনে এই বিশ্বাস দৃঢ় হতে শুরু করে যে, সেটে আসল কঙ্কালের ব্যবহার করা হয়েছিল বলেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হচ্ছে সকলের।

poltergeist

রি ফিল্মের যেই পাঁচজন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল তার মধ্যে একজন ছিল ডায়নার বড় মেয়ের চরিত্র পাঠ করা ডমিনিক ডুনে। রিপোর্ট থেকে জানা গেছিল ডমিনিক ডুনে বয়ফ্রেন্ড নাকি তাকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা করেছিল। এই ঘটনার পর তিনি পাঁচদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। এই ফিল্মে যারাই কাজ করেছিল তাদের উপরই যেন একটি অভিশাপের প্রভাব কাজ করতো ও তাদের জীবনে বিপদ নেমে আসতো এমনকি তাদের মধ্যে মৃত্য ঘটেছে। ‘পোল্টারগেইস্ট’(Poltergeist) ফিল্মেয় পর্বে অভিনয় করা লোকেরাও এই অভিশাপের কবলে পড়েছিল। যেমন অভিনেতা জুলিয়েন বেক দ্বিতীয় পর্বের মুক্তির কয়েক মাস আগেই পাকস্থলীজনিত রোগে মারা গেছিলেন।

poltergeist

এরপর এই ফিল্মে অভিনয় করা উইল স্যাম্পসন অপুষ্টি ও লিভারজনিত সমস্যা থাকার কারণে মারা যান তিনি। কিন্তু এই দুই অভিনেতার মৃত্যুর কারণ স্বাভাবিক হলেও অনেকের বিশ্বাস, অলৌকিক শক্তির কারণেই মারা গিয়েছিলেন তাঁরা। ‘পোল্টারগেইস্ট’ (poltergeist) ফিল্মের প্রথম পর্বে শিশু-অভিনেতা হিথার ও’রাউরকের অভিনয় দক্ষতা দেখে সকলে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর এই ফিল্মের যখন তৃতীয় পর্ব মুক্তির পথে সেই সময় হৃদরোগজনিত কারণে হঠাৎ মারা যায় হিথার। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। এরপর লো পেরিম্যান এই ফিল্মের প্রথম পর্বে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। অভিনেতার স্ক্রিনে উপস্থিতিও ছিল খুব অল্প। রিপোর্ট থেকে জানা গেছিল যে হটাৎ একদিন অভিনেতার বাড়িতে প্রবেশ করে একজন অপরাধী কুঠার দিয়ে মেরে তাঁকে খুন করেছিল।

poltergeist

আর সবার শেষে রিচার্ড লসন ছিলেন এই ফিল্মের ক্রুয়ের সদস্য। তিনি কোনো রকমে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন। ১৯৯২ সালে এক ইউএস এয়ার ফ্লাইট ৪০৫ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। এই বিমান দুর্ঘটনায় ৫১ জন যাত্রীর মধ্যে ২৭ জন মারা গেছিল। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে বেঁচে গেছিলেন রিচার্ড। পর পর এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় ‘পোল্টারগেইস্ট’ ছবির সঙ্গে আরও জড়িয়ে পড়তে থাকে তার অভিশাপ। হলিউডের একাংশ এই ঘটনাগুলি কাকতালীয় বলে মনে করলেও অনেকেই মনে করেন, এই অভিশাপ সত্যিই।

poltergeist