ট্রি ম্যান নামে পরিচিত হরিয়ানার এই পুলিশ 185 টি গ্রাম কে করে তুলেছেন সবুজ

যতদিন যাচ্ছে আবহাওয়া ও ভূ-বৈচিত্র দিন দিন বদলে যাচ্ছে। এর সব চেয়ে বড় কারন মানুষ নিজেদের স্বার্থে দিন দিন অপ্রয়োজনে শত শত গাছের প্রাণ নিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, “একটি গাছ একটি প্রাণ”। তবু এই দুনিয়ায় এমন কিছু ব্যক্তি আছে যারা গাছের গুরুত্বতা বুঝে তার পিছনে কাজ করে চলেছে। আজকের প্রতিবেদন হরিয়ানার সোনিপত অঞ্চলের বাসিন্দা এমনি এক ব্যক্তি জলজ্যান্ত উদাহরণ। তিনি বর্তমানে একজন চন্ডিগড় থানার পুলিশ কনস্টেবল। তার উদ্যোগে পরিবেশের প্রতি এই কাজ এলাকার মানুষের কাছে ভালোবাসা হয়ে উঠেছে।

হ্যাঁ বন্ধুরা, তিনি নিজের স্থানীয় এলাকায় ও এলাকার পাশাপাশি জায়গাতে কোটি কোটি গাছ লাগিয়ে এলাকার ভূ-বৈচিত্র বদলে দিয়েছে। তিনি জানান, যখন আমি 2011 সালে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষার জন্য চন্ডিগড় গিয়েছিলাম তখন ওখানকার সবুজ মনোরম পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করে ছিলো। এরপর থেকেই ওই পরিবেশ দেখে আমার মধ্যে গাছ লাগানোর অনুপ্রেরণা জাগে। সেই সময় আমি আবার চন্ডিগড় থানার পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরি পাই। এরপর থেকেই আমি উদ্যোগ নিয়ে প্রথমে নিজের বাড়ি থেকেই এই কাজ শুরু করি।

তারপর আমি স্থানীয় এলাকায় প্রচার শুরু করি এবং গাছের গুরুত্বতা বুঝিয়ে গাছ লাগানোর প্রকল্পের ব্যাপারে বলি। যদিও এই কাজ শুরু করার জন্য বাড়ির লোক মোটেও সমর্থন করছিল না। কারণ, আমার বেতনের পুরোটাই এই কাজে ব্যায় হতো। কিন্তু যখন আমার প্রচেষ্টা অনেক জায়গা পরিবর্তন করতে শুরু করে তখন আমার পরিবারও আমাকে সমর্থন করতে শুরু করে। প্রথমের দিকে তিনি এলাকার একটি নার্সারি থেকে চারা গাছ কিনে স্থানীয় এলাকায় গাছ লাগাতে শুরু করে। যখন এলাকার প্রায় সকল মানুষ প্রকল্পটিকে সমর্থন করতে শুরু করে তখন তিনি 2 একর জমিতে চারা গাছ তৈরির নার্সারি বানিয়ে নেয়।

জানিয়ে রাখি, নার্সারির সকল চারা গাছ এলাকার সব জায়গাতেই লাগানো হয়, এমনকি যে কেউ এই নার্সারি থেকে বিনামূল্যে গাছ এনে বসাতে পারে। তিনি তারপর গ্রামের আশেপাশের লোকের সাথে গাছের গুরুত্বতা বুঝিয়ে এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন। সেখানে তরুণ প্রজন্মের অনেকে এগিয়ে আসে এবং গ্রামেই একটি 25-30 জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গ্রামে চারা গাছ লাগানোর পর ওই কমিটি দায়িত্ব নেই গাছগুলোর যত্ন নেওয়ার।

তিনি জানান এখনো পর্যন্ত আশেপাশের 185 টি গ্রামে 1.5 লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়া স্কুল, কলেজ, রেলস্টেশন, মন্দির আরোও বিভিন্ন জায়গায় 2.5 লক্ষ চারা গাছ বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন শহরের পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলা তার প্রধান লক্ষ্য। তিনি পাখিদের জন্য খাবার ও থাকার সুব্যবস্থা করেছেন। যেখানে তিনি 8,000 মাটির পাত্র এবং 10,000 কাঠের বাসা শহর জুড়ে বিতরণ করেছেন। তিনি সোনিপতের শহরটিকে একটি ‘গ্রিন সেক্টর’ বানিয়ে তুলেছে। এই সবের উদ্দেশ্য জানতে গিয়ে তিনি বলেন, বাড়ির প্রত্যেকটি সন্তানদের যেমন যত্ন নেওয়া হয় তেমনি গাছপালার যত্ন নেয়া উচিত। কারণ, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’।