ড্রাগন থেকে শুরু করে প্রাইভেট পার্ট ঢাকার কভার, এই ৮ টি অদ্ভুত জিনিস যা দেশপ্রধানদের দেওয়া হয়েছিল উপহার
যখন দুটি দেশ একে অপরের সাথে সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করে তখন সেই দেশের প্রধান অপর দেশে যায় ও একে অপরকে উপহার দেয়। তাদের এই আনুষ্ঠানিক যাত্রার সময় রাষ্ট্রপ্রধান বা আয়োজক দেশের কূটনৈতিক কোনো গিফট দেয় বা দেশের প্রধান ব্যক্তি সমূহরা গিফট দেয়। এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে কোনো দেশের প্রধানের কাছে সমস্ত রকম সুবিধা থাকে, গোটা দেশকে চালনা করার শক্তি থাকে, তাই সেই ব্যক্তিকে এমন কি গিফট রয়েছে যেটা দেওয়া যায় এবং সেটি স্পেশালও হবে? তাই এই প্রধানদের এমন গিফট উপহার দেওয়া হয় যা সবচেয়ে আলাদা বা ইউনিক হয়। তাই আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে এমন ৮ টি অদ্ভুত গিফটের বিষয় আলোচনা করবো যা দেশের প্রধান বা কূটনৈতিকদের দেওয়া হয়। আসুন জেনেনি।
১) ইন্দোনেশিয়ায় থাকা কমোডো ড্রাগনগুলি খুব ভয়ঙ্কর প্রাণী হয়। এদের দেখলে যে কোনো মানুষের আত্মা কেঁপে উঠবে। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে একবার তাদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান যখন ইন্দোনেশিয়ায় আসেন (ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট গিফট ড্রাগন), তখন প্রেসিডেন্ট সুহার্তো তাকে ২টি কমোডো ড্রাগন উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে, তিনি তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশকে ২টি কমোডো ড্রাগনও দেওয়া হয়েছিল।
২) ২০০৯ সালে যখন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (Barack Obama) ব্রিটেন যাত্রা করেছিলন তখন তিনি প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে (Queen Elizabeth II) একটি আইপড ক্লাসিক এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে (David Cameron) ২৫টি ক্লাসিক আমেরিকান চলচ্চিত্র ডিভিডি (iPod and DVD) উপহার দেন। বিনিময়ে ওবামা পেয়েছেন রাবারের বুট এবং বিয়ার।
৩) ২০০৯ সালে ওবামা সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়ান সরকারকে আরেকটি অদ্ভুত উপহার দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়া-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির জন্য তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে একটি প্রতীকী বোতাম দিয়েছিলেন যার ওপর রুশ ভাষায় ‘রিসেট’ লেখার কথা ছিল কিন্তু ভুল করে রিসেটের পরিবর্তে ‘ওভারলোড’ লেখা হয়েছিল।
৪) ২০১৩ সালে, মালি দেশটির সরকার তাদের দেশ থেকে জিহাদিদের হত্যা করার জন্য ফ্রান্সকে ধন্যবাদ জানায়। এ জন্য তিনি তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দকে একটি ড্রোমেডারি অর্থাৎ ফরাসি প্রেসিডেন্টকে উট উপহার দেন। সে সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন যে উটের পরিচর্যা করার জন্য তার কাছে পর্যাপ্ত সম্পদ নেই, তাই তিনি মালির স্থানীয় একটি পরিবারের সাথে উটটি রেখে গেছেন। কিন্তু সেই পরিবারই তাকে মেরে খেয়ে ফেলে। মালির সরকার এতে বিব্রত হয় এবং তারপর তারা ফরাসী রাষ্ট্রপতির জন্য একটি বড় উট কিনে নেয়।
৫) ১৯৪৭ সালে, যখন রানী এলিজাবেথ এবং প্রিন্স ফিলিপ বিয়ে করছিলেন, এই বিশেষ উপলক্ষে, অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের ৫০০ টুকরো টিনজাত আনারস পাঠায় (ব্রিটিশ রাণীকে টিনজাত আনারস উপহার)। সেই সময় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ব্রিটেনে খাবার কাটা হচ্ছিল, এমন পরিস্থিতিতে এই উপহারটি অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করা হয়।
৬) ১৯৭২ সালে, ফ্রান্সের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জর্জেস পম্পিডো যখন ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন, তখন তিনি রানীকে একটি বিশাল ফড়িং আকৃতির ওয়াইন কুলার দিয়েছিলেন, যাতে মদ ঠান্ডা রাখা হয়েছিল। এটি একটি ওয়াইন টেবিল পরিণত তার ডানা ঘুরান
৭) এখন সবচেয়ে উদ্ভট উপহার সম্পর্কে কথা বলা যাক। ভানুয়াতু দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দেশ। দীর্ঘদিন ধরে, ইংল্যান্ডের প্রাক্তন যুবরাজ এবং রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপকে দেবতার মতো পূজা করা হতো। এখানকার একটি প্রধান উপজাতি ফিলিপকে উপহার পাঠাত এবং তিনি ফেরত উপহারও দিতেন। 2010 সালে, এখানকার উপজাতিরা অনুভব করেছিল যে তাদের ঈশ্বরের উপজাতিতে ব্যবহৃত একটি বিশেষ আবরণ নেই, যার দ্বারা তারা তাদের গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখত (প্রাইভেট পার্ট ঢেকে রাখার জন্য শীথ)। তারপর তিনি সেই কভারটি ফিলিপের কাছে উপহার হিসেবে পাঠালেন। এটি একটি লিঙ্গ আকৃতির আবরণ যা ভাঁজ করা খড় দিয়ে তৈরি এবং সেই উপজাতি দ্বারা পরিধান করা হয়।
৮) ডোনাল্ড রামসফেল্ড ছিলেন মধ্য এশিয়ায় আমেরিকান কূটনীতিক। 1983-84 সালে, তিনি ইরাকের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের সাথে কয়েকবার দেখা করেছিলেন। দুজনেই একে অপরকে উপহার দিত। ডোনাল্ড সাদ্দামকে মধ্যযুগের যুদ্ধে ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি এবং সোনার কাউবয় বুট দিয়েছিলেন। কিন্তু সাদ্দামের উপহার ছিল খুবই অদ্ভুত। তিনি ডোনাল্ডকে ইরাকি সেনাদের পশু নির্যাতনের ভিডিও দেন। যেখানে নারী সিহারীকে সাপ কামড়ে মারতে দেখা গেছে আর পুরুষ সৈন্যদের কুকুর মারতে দেখা গেছে।
