মৃত্যুর ৭৫ বছর পরও আজও সীমান্ত পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন হরভজন সিংহ, দেশের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ

দেশের প্রতি ভালোবাসার জন্য প্রাণ দিয়েছেন বিভিন্ন ভারতীয় জওয়ান। তবে এরম কখনো শুনেছেন?? মৃত্যুর ১২ বছর পরেও দেশের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে ভারতীয় কোনো জওয়ান। কি! ভয় লাগছে তো। না না উনি কারোর ক্ষতি করেন না। বরংচ ওনাকে ভারতীয় জওয়ান এবং গ্রামের লোকেরা।

সেই ভারতীয় জওয়ানের নাম স্বর্গীয় হারভজন সিংহ। তাঁর মৃত্যু ১২ বছর হয়ে গেলেও এখনও শোনা যায়, তিনি অদৃশ্য রূপে দেশরক্ষার কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ভারতীয় সেনা জওয়ানদের শত্রুদের তরফ থেকে আসা বিপদ সংকেত তিনি দিয়ে থাকেন।

কোনো ভারতীয় সেনা পোশাকের ব্যাপারে সজাগ না থাকলে সপাটে থাপ্পড় উড়ে আসে। এক ভারতীয় সেনা এও বলেন, তাঁর বিছানায় থাকা জিনিস পত্র গুলো মাঝে মাঝে আপনা আপনি এদিক ওদিক হয়ে যায়। ভারতীয় জওয়ানরা এই প্রসঙ্গে তাঁদের মত, হারভজন সিংহ বিশ্রাম নিতে আসেন।

হারভজন সিংহ জন্ম গ্রহণ করেন পাঞ্জাবের একটি গ্রামে ১৯৪৬ সালের ৩০ শে আগস্ট। প্রথাগত প্রাথমিক শিক্ষার গ্রামে পাঠ করার পর , পাঞ্জাব শহরের ডিএভি হাই স্কুলে পড়াশুনা শেষ করেন।
এরপর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান দেন তিনি।

প্রথমদিকে তিনি যোগদান দেন, সেনাবাহিনীর পাঞ্জাব রেজিমেন্টে। এরপর সিকিম এবং তিব্বতের মাঝে নাথু গিরিপথে তাঁর পোস্টিং হয়। যদিও গিরিপথটি দূর্গম এবং সংকীর্ণ এলাকায় প্রায় ১৪ হাজার উচ্চতায়।

একদিন ভারতীয় জওয়ান হারভজন আউটপোস্টের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছিলেন মালবাহী পশুর পিঠে পণ্য নিয়ে। পথটি ছিলো অত্যন্ত দূর্গম এবং সঙ্কীর্ণ পথ। সময়টা ছিল অক্টোবর মাস। হটাৎ ধস এবং বৃষ্টি নামার কারণে হরভজন সিংয়ের মারা যান।

হারভজন সিং যে আউটপোস্ট থেকে রওনা দিয়েছলেন সেখানে সেই মালবাহী পশুরা ফিরে এলে বাকী জওয়ানরা বুঝতে পারে হারভজন সিংহের বিপদ হয়েছে। এরপর তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলেও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে জওয়ান প্রীতম সিংয়ের স্বপ্নে জানিয়েছিলেন , তাঁর নিথর দেহ কোথায় আছে? ব্যাপারটা অবাক করার মতো হলেও হারভজন সিংহের দেহ ওখানেই পাওয়া যায়। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে তিনি মারা যান।

সেই অঞ্চলে তাঁর স্মৃতি স্বরূপ মন্দির বানানো হয়েছে। সেই মন্দিরে অনেকে মানতও করেন। হারভজন সিংহের জন্য ‘ প্লাস মাইনাস ‘নামে শর্ট ফিল্মও বানানো হয়েছে।