Indian railways : স্বাধীনতার আগে ট্রেনে এসি কোচ থাকত এই রকম, বরফের দিয়েই দেওয়া হত ঠান্ডা বাতাস
ভারতীয় রেল (Indian Railways) বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল ব্যবস্থা। দেশে ট্রেনে (Train) যাত্রা করেন নি এমন মানুষ কমই থাকবে। আজকাল ট্রেনে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। ভারতীয় ট্রেনে অনেক ধরনের বগি থাকে। যেমন জেনারেল, স্লিপার, থার্ড ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস এবং ফার্স্ট ক্লাস। এগুলি ছাড়াও, সময়ের সাথে সাথে ভারতীয় রেলওয়ের সাথে আরও অনেক ধরণের বগি সংযুক্ত হয়েছে। তবে আপনি কি জানেন যে দেশের প্রথম ট্রেন কোনটি যেখানে এসি বগি ব্যবহার করা হয়েছিল এবং কীভাবে এটি চালু হয়েছিল?
প্রথম এসি ট্রেনের নাম ফ্রন্টিয়ার মেইল
দেশের প্রথম এসি ট্রেনের নাম ফ্রন্টিয়ার মেইল ট্রেন। এই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করেছিল ৯৪ বছর আগে ১লা সেপ্টেম্বর ১৯২৮ সালে। আগে এই ট্রেনটি পাঞ্জাব এক্সপ্রেস নামে পরিচিত ছিল। তবে ১৯৩৪ সালে, যখন এসি কোচ যুক্ত করা হয়, তখন এর নাম পরিবর্তন করে ফ্রন্টিয়ার মেইল করা হয়। এটি একটি খুব বিশেষ ট্রেন ছিল। সে সময় এটি রাজধানী ট্রেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
বরফ ব্যবহার করা হয়েছিল
ফ্রন্টিয়ার মেইলের এসি ট্রেনকে ঠাণ্ডা রাখতে এখনকার মতো আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হতো না। তবে বিশেষ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতো। আসলে, সেই সময়ে ট্রেনকে ঠান্ডা রাখতে বরফের টুকরো ব্যবহার করা হত। এসি বগি ঠান্ডা করার জন্য বগির নিচে একটি বাক্স রাখা হত। সেই বাক্সে বরফ রেখে একটি ফ্যান বসানো থাকতো। এই ফ্যানের সাহায্যে এটি যাত্রীদের ঠান্ডা রাখতো।
সুভাষ চন্দ্র বসু এবং মহাত্মা গান্ধীও ভ্রমণ করেছিলেন
এই ট্রেনটি মুম্বাই থেকে আফগান বর্ডার, পেশোয়ার পর্যন্ত চলত। সে সময় ব্রিটিশ অফিসার ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারাও এই ট্রেনে যাতায়াত করতেন। ট্রেনটি দিল্লি, পাঞ্জাব এবং লাহোর হয়ে পেশোয়ারে পৌঁছাত। ফ্রন্টিয়ার মেইল ৭২ ঘন্টায় এই যাত্রা শেষ করত। এ সময় গলিত তুষার সরিয়ে বিভিন্ন স্টেশনে ভরাট করা হয়। এই ট্রেনটি খুব বিশেষ ছিল কারণ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু এবং মহাত্মা গান্ধী এতে বসে ভ্রমণ করেছিলেন।
এখন এই ট্রেনের নাম গোল্ডেন টেম্পল মেল
এই ট্রেনের বিশেষত্ব ছিল এটি কখনই দেরি করত না। ১৯৩৪ সালে, যখন ট্রেনটি চালু হওয়ার ১১ মাস দেরি হয়েছিল, তখন সরকার ব্যবস্থা নেয় এবং ড্রাইভারকে একটি নোটিশ পাঠায়। ১৯৩০-৪০ সাল পর্যন্ত এই ট্রেনের ৬টি বগি ছিল। তখন এতে ৪৫০ জন যাতায়াত করতেন। যাত্রার সময় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের খাবারও দেওয়া হত। শুধু তাই নয়, যাত্রীদের বিনোদনের জন্য সংবাদপত্র, বই ও কার্ড দেওয়া হত। স্বাধীনতার পর এই ট্রেনটি মুম্বাই থেকে অমৃতসর পর্যন্ত চলতে শুরু করে। ১৯৯৬ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘গোল্ডেন টেম্পল মেইল’।