২০১৪ সালে বাজার থেকে হারিয়ে যাওয়া দ্য কিং অফ ইন্ডিয়ান রোডস অ্যাম্বাসেডর আবারো নতুন রূপে আসছে ফিরে

একটা সময় ছিল যখন কারুর কাছে এম্বাসেডর গাড়ি থাকা মানে একটা আলাদা সম্মানের বিষয় ছিল। কোনো গ্রাম, গলি বা পাড়াতে এম্বাসেডর গাড়ি আসা মানে ধরা হতো যে কোনো বড় ও বিজ্ঞ ব্যক্তি এসেছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ডিএম, এসডিএম সবাই আগে এই গাড়ি ব্যবহার করতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আধুনিক গাড়ি গুলি বাজারে আধিপত্য স্থাপন করে নিয়েছে এবং এই গাড়ির ডিমান্ড বাজারে শেষ হয়ে গেছে। তাই ২০১৪ সালে এই গাড়ির প্রোডাকশন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

এম্বাসেডর গাড়িটি আবার ফিরে আসছে

সম্প্রতি একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এম্বাসেডর গাড়িটি পুনঃরায় নতুন রূপে ফিরে আসছে। বলা হচ্ছে এম্বাসেডর তৈরি করা কোম্পানি হিন্দুস্থান মোটোরস ইলেকট্রিক বাহন সেগমেন্টের মাধ্যমে ফেরার পরিকল্পনা করছে।

সম্প্রতি অটো ইন্ডাস্ট্রিতে হওয়া বিপ্লবের মধ্যে অধিকাংশ কোম্পানি গুলি ইলেকট্রিক সেগমেন্টে প্রবেশ করার চিন্তাধারাকে শক্ত করছে। যদিও ইলেকট্রিক বাহনের শিল্প এখন প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে কিন্তু তা সত্ত্বেও খবর আসছে যে এম্বাসেডর নির্মাতা হিন্দুস্থান মোটরস পুনঃরায় ভারতে আগমনের পরিকল্পনা করছে। এখন ইভি শিল্পে একটি ইউরোপীয় অটো কোম্পানির সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রবেশের মাধ্যমে তাদের ব্যবসাকে পুনঃনির্মাণ করার চেষ্টা চলছে।

১৯৫৭-এ হয়েছিল লঞ্চ

হিন্দুস্থান মোটর হিন্দুস্তান মোটরস 1957 সালে ব্রিটিশ মোটর কোম্পানির পপুলার গাড়ি Morris Oxford Series 3 দ্বারা অনুপ্রেরিত হয়ে এম্বাসেডর গাড়িটিকে লঞ্চ করেছিল। এই গাড়িটির উৎপাদন উত্তরপাড়ার প্ল্যান্টে শুরু হয়েছিল এবং ৫৮ বছর ধরে উৎপাদন চলার পর শেষ গাড়িটিও এই জায়গাতেই উৎপাদন করা হয়েছিল।

ভারতীয় রাস্তার রাজা নামে পরিচিত ছিল গাড়িটি

হিন্দুস্থান মোটরসের এম্বাসেডর গাড়িটি ‘কিং অফ ইন্ডিয়ান রোডস’ নামে বিখ্যাত ছিল। কারণ ৮০ দশক পর্যন্ত ভারতের কার ইন্ডাস্ট্রিতে এই কারটি রাজত্ব করতো। তখনকার সময় বেশিরভাগ এম্বাসেডর কারে লাল-নীল বাতি লাগা থাকতো এবং এই গাড়ি নেতা-মন্ত্রীদের কাছে বেশি দেখা যেত। তাই সাধারণ মানুষের কাছে এই গাড়ি চড়া অনেক বড় ব্যাপার ছিল।

এম্বাসেডর গাড়িটিতে ১.৫ লিটার ও ২.০ লিটারের পাওয়ারফুল ডিজেল ইঞ্জিন ও ১.৮ লিটারের পেট্রোল ইঞ্জিন থাকতো। এর ইঞ্জিন আজকের যেকোন SUV এর পাওয়ারের থেকে কম ছিল না।

 এইকারণে সবার থেকে পিছিয়ে পড়েছিল এম্বাসেডর গাড়িটি

বহু বছর ধরে ভারতের রাস্তায় রাজত্ব করা এই গাড়িটির জনপ্রিয়তাকে আঘাত করেছিল মারুতি গাড়ি। এই কোম্পানিটি এম্বাসেডরকে টক্কর দেওয়ার জন্য জাপানের সুজুকি মোটরসদের সাথে মিলে ৮০০ সিসি এর সস্তা গাড়ি লঞ্চ করেছিল। এর ফলে এম্বাসেডর চাহিদা মার্কেটে কমতে শুরু করেছিল। ধীরে ধীরে এই গাড়ির চাহিদা সময়ের সাথে এতটাই কমে যায় যে ২০১৪ সালে এই গাড়ির প্রোডাকশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।