দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় রেল দুর্ঘটনা! কার গাফিলতিতে এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, জানা গেল আসল কারণ
শুক্রবার সন্ধ্যেয় ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল মানুষজন। ওড়িশার বালেশ্বরে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি, একইসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই টিনটি ট্রেন। যার ফলে দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা দেশের মানুষ।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৮০ জন। তবে সরকারী তরফে এই হিসেব একটু হলেও কম। একেবারে দেশলাই বাক্সের মত করে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রেলের কামরাগুলো। তার মধ্যে বেশকিছু কামরা এমনভাবে তুবড়ে গেছে, যা দেখে মনে হচ্ছে কাগজ দলা পাকিয়ে রাখা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই সকালে উপস্থিত হয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। তবে রেলমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে দুর্ঘটনার কারণ জানার জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ জানার জন্য উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি একটি স্বাধীন তদন্ত করবে রেল নিরাপত্তা কমিশনারও। তবে এখন আমরা উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যের উপর বেশি ফোকাস করব’।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যে ৭ টা নাগাদ প্রথমে বাহনাগা বাজার স্টেশন থেকে ৩০০ মিটার দূরে শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে পাশে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে প্রবল জোরে ধাক্কা খায়। পাশের ট্র্যাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি। এরপর পাশের লাইন দিয়ে অর্থাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস করমণ্ডলের লাইনচ্যুত কোচগুলির সঙ্গে ধাক্কা খায়। যশবন্তপুর থেকে হাওড়াগামী ওই ট্রেন, বিচ্ছিন্ন হওয়া বগিগুলোতে ধাক্কা লেগে লাইনচ্যুত হয়। যার ফলে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
একইসঙ্গে তিনটে ট্রেনের দুর্ঘটনার ফলে দুমড়ে মুচড়ে যায় ট্রেনের কামরাগুলো। জানা দিয়েছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের B2 থেকে B9 পর্যন্ত বগি, A1-A2 কোচ, কোচ B1, ইঞ্জিন সব উলটে পালটে যায়। তবে অল্পের জন্য বেঁচে যায় H1 এবং GS কোচগুল, যেগুল ট্র্যাকেই ছিল। যাতে করে অনুমান করা যাচ্ছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বেশিভাগ যাত্রী এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই সেখানে উদ্ধারকারী দল পৌঁছে গিয়েছে এবং বিভিন্ন ভাবে আটকে পরা মানুষদের উদ্ধার করা হচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় ওই স্থান। বিকট আওয়াজ শুনে আশেপাশে লোকজন ছুটে এসে উদ্ধারের কাজে হাত লাগায়। ইতিমধ্যেই প্রায় ৯০০ জন মানুষকে উদ্ধার করে বালেশ্বর, ময়ূরভঞ্জ, ভদ্রক, জাজপুর এবং কটক জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই ধ্বংসস্তূপে এখনও আটকে রয়েছে প্রচুর মানুষ।