মধ্যবিত্ত এক বাঙালির হাত ধরেই তৈরি হয়েছে DTDC কোম্পানি, আজ ব্যবসা ছুঁয়েছে ৫০০কোটি

মধ্যবিত্ত এক বাঙালির হাত ধরেই তৈরি হয়েছে DTDC কোম্পানি

সময়টা তখন নব্বইয়ের দশক। তখনও ভারত মুক্ত অর্থনীতির হাত ধরেনি। আরও এক বছর পরে তা হতে পারে। ফলে স্টার্টআপের ধারণাও কালের গর্ভে তখন। তবে সেই সময়ই বিমা সংস্থায় কর্মরত এক বাঙালি যুবক বুঝতে পারছিলেন, পোস্ট অফিসের তৎকালীন পরিষেবা এবং গ্রাহকদের চাহিদার মধ্যে কোথাও একটা বড়সড় সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

Subhasish Chakraborty

প্রথম প্রথম খুব একটা বেশি চিন্তা করেন নি তিনি কিন্তু ক্রমশ সেই চিন্তাটা মজবুত হতে থাকে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্মানো ওই বাঙালির মধ্যে। এদিকে বিমা সংস্থার নিরাপদ চাকরি থাকলেও তিনি বলেন ‘নিজে কিছু করব এবং পোস্ট অফিসের পরিষেবা গ্রাহকদের চাহিদার মধ্যে যে ফাঁক রয়েছে সম্ভব হলে তা পূরণ করব’। এর পর তিনি বিমা সংস্থার চাকরি ছেড়ে নিজস্ব ক্যুরিয়ার কোম্পানি খুলে ফেলেন শুভাশিস চক্রবর্তী (Subhasish Chakraborty)।

কোম্পানির নাম DTDC। DTDC-র মাধ্যমে দেশের ক্যুরিয়ার পরিষেবার চালচিত্রই বদলে দিলেন শুভাশিস। দেশের ক্যুরিয়ার পরিষেবায় ইতিহাস তৈরি করা বর্তমানে সেই কোম্পানির রাজস্বের পরিমাণ ৫০০ কোটিরও বেশি! কারণ, DTDC-র মাধ্যমে দেশের ক্যুরিয়ার পরিষেবার চালচিত্রই বদলে দিলেন শুভাশিস (Subhasish Chakraborty)। বর্তমানে সারা দেশে ৪টি জোনাল অফিস, ২০টি প্রাদেশিক অফিস, ৫৭০টি অপারেটিং স্থল এবং প্রায় ৪০ হাজার কর্মী এই কোম্পানির সঙ্গে জড়িত।

শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও নিজের কাজের পরিসর ছড়িয়ে রেখেছে এই কোম্পানি। প্রতি মাসে কোম্পানি স্থানীয়, আন্তঃরাজ্য, দেশীয়, আন্তর্জাতিক, সবমিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ পার্সেলের লেনদেন করে থাকে। বিশ্বের সেরা পোস্টাল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে এই কোম্পানি। শুভাশিস চক্রবর্তীর হাতে তৈরি কোম্পানির অস্তিত্ব রয়েছে ব্রিটেন, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, অষ্ট্রেলিয়া, চিন, সিঙ্গাপুর এবং অন্য একাধিক এশিয়া মহাদেশের দেশে।

Subhasish Chakraborty

শুধুমাত্রই এটা দিয়ে DTDC-কে বিচার করতে গেলে হয়তো ভুল হবে। কারণ, বাণিজ্যিক পরিসর ছাপিয়ে DTDC একটা প্রতীকে উন্নীত হয়েছে। এই ট্যাগলাইনই আরও সুন্দরভাবে প্রদর্শিত হয়েছে এক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। বিজ্ঞাপনের টাইটেল হল—‘Going Beyond the Parcels’। সেই অ্যাডের মুখ ভারতীয় প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির।

সেখানে বাঙালির আইকন সৌরভ বলে যান, কীভাবে মানুষের পার্সেল এক জায়গা থেকে আন্য জায়গায় নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছে এই কোম্পানি। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের ক্যুরিয়ার, এক্সপ্রেস ও পার্সেল পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্যবসার সম্প্রসারণের চক্রবৃদ্ধি হার হল ১০%।