লাগবে না কোনো জমি বস্তার মধ্যেই বারোমাস চাষ হবে শসা, জানুন চাষের পদ্ধতি
জমি ছাড়াই বস্তার মাধ্যমে শসা চাষের নিয়ম, জৈব সার প্রয়োগে অধিক ফলনের পদ্ধতি অবলম্বন করুন
১২ মাসের ফল বা ফসলের মধ্যে একটি হল শসা (Cucumber)। বাজারে গেলে প্রতিদিনই দেখা মেলে এই জনপ্রিয় ফলের। শসা ছাড়া স্যালাড অসম্পূর্ণ। খাবারের সঙ্গে শসার এক টুকরো মুখের স্বাদ পরিবর্তনের পাশাপাশি, ডাক্তারি পরামর্শে, শসার কার্যকারিতা ও উপকার অনেক। শসা শরীরের জল শূন্যতা, কিডনির পাথর, কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো সহ একাধিক কার্যকলাপে লিপ্ত। এছাড়া শসার মধ্যে ভিটামিন বি, নিয়াসিন, থিয়ামিন একাধিক উপকারী উপাদান থাকে।
কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পেস্টিসাইড ও রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে উপাদানগুলি আমাদের শরীরে পরোক্ষ ভাবে ক্ষতিকর হয়ে উঠছে। তবে আমরা আপনাকে যুক্তি দেবো বাজারের এই ফল এড়িয়ে নিজের বাড়িতেই শুধুমাত্র বস্তার মাধ্যমে মাসের পর মাছ চাষ করুন শসা। যেখানে বাড়িতে খাওয়ার জন্য দিতে হবে না বিষাক্ত কোন ওষুধ বা রাসায়নিক। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক জমি না থাকলেও কিভাবে বাড়িতে বস্তার মাধ্যমে চাষ করবেন শসা (Cultivation cucumbers home)।
১. প্রথমে আপনি সিমেন্টের বস্তা বা এই জাতীয় কোন পাত্রে পরিমাণ মতো উর্বর মাটি ভরাট করুন। আমরা আপনাকে বলব শসা চাষের জন্য দোয়াশ মাটি খুব উপযুক্ত। বীজ রোপনের আগে মাটির সঙ্গে অল্প গোবর সার মিশিয়ে নিতে পারেন।
২. মাটি যদি শুষ্ক থাকে এতে হালকা পরিমাণ জল মিশিয়ে আদ্রতা ভাব করে নিন। তারপর বাজার থেকে আনা শসার বীজ মাটির ৪-৬ ইঞ্চির নিচে পুঁতে দিন। তারপর উপরের মাটিটি হালকা হাতে করে চেপে দেবেন যাতে উপরের মাটি একদম হালকা না হয়।
৩. বীজ বসানোর একদিন বা দুদিন পর পর মাটিটি হালকা জলের স্প্রে করতে থাকুন, যাতে মাটির আদ্রতা বজায় থাকে এবং অঙ্কুর বেরাতে সুবিধা হয়। এরপর দেখবেন ৮-১০ দিনের মাথায় শসার গাছ বেরিয়ে আসছে।
৪. আমরা আপনাকে বলব শসার গাছ বসানো এই বস্তাটি যেন খুব ছায়ায় না থাকে। খেয়াল রাখবেন এতে যেন সূর্যের আলো পায়। কারণ সূর্যের আলোতেই তাদের খাদ্য উৎপাদন ও বৃদ্ধি।
৫. আমরা আপনাকে বলব, আপনি রাসায়নিক সার এড়িয়ে জৈব সার ব্যবহার করতে পারেন। যদি বাড়িতে গোবর সার থাকে তাহলে সব থেকে ভালো। নাহলে আপনি দোকান থেকেও জৈব সার কিনতে পারেন। যার মধ্যে জিঙ্ক, কপার, এমোনিয়া, সালফেট, ফসফরাস গাছের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান।
৬. তারপর গাছ বড় হলে ৪০-৪৫ দিনের মাথায় দেখতে পাবেন ফল ধরছে। যেহেতু এটি একটি লতা জাতীয় গাছ সেহেতু আপনি মাচার মতো সিস্টেম করে দিতে পারেন। এতে শসার ফলন বৃদ্ধি ও সুপুষ্ট হবে।
৭. আপনি যদি এটা বাড়িতে খাওয়ার জন্য চাষ করেন তাহলে আমরা আপনাকে বলব, বিষাক্ত কোনো পেস্টিসাইড ব্যবহার না করাই ভালো। যদি গাছের মধ্যে পোকার আক্রমণ দেখতে পান, তাহলে আপনি দোকানে গিয়ে সেই রকম পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
আপনাকে বিশেষ ভাবে জানিয়ে দি, একটি শসা গাছ বেশি দিন ফল দিতে পারেনা। কিন্তু পুনরায় বীজ রোপন করে সারা বছরই শসা উৎপন্ন (Cucumber Farming) করা যায়। এই উপরের পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি মাসের পর মাস উৎপন্ন করতে পারবেন জনপ্রিয় ফল শসা।