মহাকাশে জন্ম নেবে শিশু! আইভিএফ প্রযুক্তির সাহায্যেই এই অসাধ্য সাধন করবেন বিজ্ঞানীরা

মহাকাশ নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার কোন শেষ নেই। প্রতিনিয়তই মহাকাশ নিয়ে নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চলেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে এবার শোনা গেল, মহাকাশেও কি শিশুর (baby) জন্ম হতে পারে? এই বিষয় নিয়ে নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছেন গবেষকরা।

নেদারল্যান্ডসের একটি মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে মহাকাশে মানব শিশু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। তবে এই প্রজনন হবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে। নেদারল্যান্ডের কোম্পানি স্পেসবর্ন ইউনাইটেড একটি বায়ো-স্যাটেলাইট তৈরি করে তার ভিতরে আইভিএফ চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুর জন্ম দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই শিশুদের স্পেস বেবিস অর্থাৎ মহাকাশের শিশু বলা হচ্ছে।

img 20230204 174433

আগামী তিন মাসের মধ্যে এই বায়ো-স্যাটেলাইটের প্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি কানাডা থেকে চালু হবে। স্পেসবোর্ন ইউনাইটেডের ডাঃ এবার্ট এডেলব্রোক জানিয়েছেন, আমাদের লক্ষ্য হল আমরা ভবিষ্যতে মহাকাশে স্বাভাবিক মানব প্রজননের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে পারি। কিন্তু তার আগে আমাদের কৃত্রিম প্রজনন করতে হবে এবং দেখতে হবে মহাকাশে জন্ম নেওয়া শিশুরা সুস্থ আছে কি না। তাদের আয়ু কেমন হচ্ছে এবং তাঁদের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা।

ডাঃ এডেলব্রোক আরও জানান, মহাকাশে সঠিকভাবে মানব প্রজনন করার আগে মেডিক্যাল রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি ব্যবহার করে নৈতিকতা দিয়ে শিশুদের তৈরি করার কাজ করব। যাতে করে আমরা আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। জানিয়ে রাখি, ইঁদুরের শুক্রাণু এবং ডিম দিয়ে শুরু করা হবে এই কাজ।

পৃথিবীর বাইরে একটি মানব বসতি গড়ে তোলার উদ্যোগক্তা আসগার্ডিয়ার প্রধান লেম্বিট ওপিক জানান, মহাকাশে শিশু উৎপাদনের আগে আমাদের জৈবিক স্তরে এমন কৌশল অনুসন্ধান করতে হবে, যা কৃত্রিম উপায়ে ভ্রূণ তৈরি করতে পারে। যাতে আমরা নিরাপদ ডেলিভারি করতে পারি।

img 20230204 174450

এবিষয়ে ২০১৯ সালে ডাঃ এডেলব্রোক বলেছিলেন, আগামী ১২ বছরের মধ্যেই মহাকাশে সন্তানের জন্ম দেবে মানুষ। আশা করা যাচ্ছে ২০৩১ সালের মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন হবে। তবে তার জন্য প্রতিটি প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট, মেশিন, জীব ও মহাকাশের কক্ষপথ নির্ভুলতার সাথে নির্বাচন করতে হবে।

বর্তমানে, এই বিষয়টির দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে যে, শুরুতে এমন দুটি ডেলিভারি হওয়া উচিত যাতে কোনও ধরণের ভুল না হয়। এছাড়াও, মহাকাশে জন্ম নেওয়া একটি শিশু উচ্চ মাত্রার প্রাকৃতিক বিকিরণ সহ্য করতে পারে। আমরা মহাকাশে বায়ো-স্যাটেলাইটের ভিতরে আইভিএফ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন করব।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল। সহজে হবে না। আবহাওয়ার প্রভাব দেখতে হবে। চালু করতে কোনো বিলম্ব করা উচিত নয়। ডাঃ এডেলব্রোক বলেছেন, আমরা শুধুমাত্র একজন গর্ভবতী মহিলার সঙ্গে পরীক্ষা করতে পারি না। আমাদের কমপক্ষে ৩০ জন গর্ভবতী মহিলার প্রয়োজন। তবে তার আগে আমরা নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে ইঁদুরের ওপর এই পরীক্ষা করতে চাই।