ছেলে বলিউডের প্রথম সারির কোরিওগ্রাফার মাসিক আয় কোটি টাকা, তবুও চা বিচে সংসার চালান ধর্মেশের বাবা

বর্তমানে তিনি বলিউডের প্রথম সারির ডান্স কোরিও গ্রাফার। দারিদ্র্যের মধ্যে মানুষ হয়ে আজ তিনি সাফল্যের চূড়ায়। বলিউডের ডান্সার, কোরিও গ্রাফারদের তালিকায় প্রথম দিকেই নাম আসবে ধর্মেশ ইয়েলান্ডের। ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ এর মঞ্চ থেকে তাঁর বলিউডে যাত্রা শুরু । অনেক ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে অনেক স্ট্রাগল এর মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে আজ তিনি বিচারকের আসনে। প্রথমদিকে ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ অডিশন এর সময় তাঁর নাচ সেভাবেই মুগ্ধ করতে পারেনি তৎকালীন বিচারকদের অর্থাৎ রেমো ডিসুজা, গীতা কাপুর এবং টেরেন্স লুইস কে।

সেই সময়ে বিচারকদের নজরে আসার জন্য সেরম কোনো এক্স ফ্যাক্টর ছিলনা তাঁর।কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর পারফরমেন্সে জোরে আর পিছনে ফিরতে হয়নি । স্টেজে যখন গান চালু হত অন্য এক ধর্মেশকে দেখতেন বিচারকেরা। ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ এর ওই সিজিনে ধর্মেশ জিততে না পারলেও বিচারকসহ দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। এই সিজন শেষ হওয়ার পর পরবর্তীকালে রেমো ডিসুজা তাঁর পরিচালিত এবিসিডি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন ধর্মেশ কে।

এই ছবিতে ধর্মেশ এর নাচ যেমন দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল তার সাথে সাথে তাঁর অভিনয়ও যথেষ্ট প্রশংসা করার মত ছিল। পরবর্তীকালে তিনি রিয়ালিটি ডান্স শো এর বিচারকের আসনে বসেন। ধর্মেশ মূলত একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনে মধ্য দিয়ে মানুষ হতে হয় তাঁকে। বাবার একটি ছোট্ট চায়ের দোকান ছিল সেই থেকে যা উপার্জন হত তাই দিয়ে তাঁদের সংসার চলত। কিন্তু পুরসভার কাজের জন্য এই ছোট্ট চায়ের দোকানও ভাঙ্গা পড়ে।

অনেক কষ্ট করে অর্থ জোগাড় করে ধর্মেশের পড়াশোনার টাকা জোগাড় করেছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু ছোট থেকেই ধর্মেশের নাচের প্রতি অত্যাধিক আগ্রহ দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ধর্মেশকে নাচের স্কুলে ভর্তি করার। অত্যাধিক আর্থিক অনটনের মধ্যেও টাকা জোগাড় করে তাঁর বাবা তাঁকে একটি নাচের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন। পরবর্তীকালে অর্থ উপার্জনের জন্য ধর্মেশ বিভিন্ন রকম পেশার সাথে যুক্ত হন । কলেজের পড়া চলাকালীন একসময় তিনি পিয়নের কাজও করেছেন । এছাড়া ছোট ছোট বাচ্চাদের নাচ শেখাতে তিনি ।

পরবর্তীকালে বলিউডের বিভিন্ন ছবিতে ব্যাকআপ ডান্সার হিসেবেও তাঁকে দেখা যায় । তবে ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স এর মঞ্চে অংশগ্রহণ করায় তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। অনেক স্ট্রাগলর পর আজ তিনি সাফল্যের শিখরে। কিন্তু এতকিছুর পরও তাঁর বাবা সেই ছোট্ট চায়ের দোকান চালায় । ধর্মেশের কথায় বাবাকে অনেকবার বারণ করা সত্ত্বেও তিনি এই পেশা থেকে নিজেকে সরাতে চাইছেন না । ছেলে বিখ্যাত হওয়া সত্বেও আজও বাবা চা বিক্রি করেকরে চলেছেন।