অহংকার ভেঙে চুরমার! বয়কট ট্রেন্ডের জেরে ক্যারিয়ার শেষ বলিউডের এই সেলেব্রেটিদের

কারিনা, অর্জুন ও অলিয়ার পর মন্তব্য প্রকাশ করলেন বলিউডের অভিনেতা ফারহান আখতার

সম্প্রতি কিছু সময় ধরে বলিউডের (Bollywood)অবস্থা খুব খারাপ হয়ে রয়েছে। প্রথমে গোটা দেশে সাউথ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ক্রেজ বলিউডে অবস্থা খারাপ করে দিয়েইছিল আর এখন গোটা দেশে বয়কট বলিউডের (boycott Bollywood) ট্রেন্ড বলিউডকে (Bollywood)  শেষের পথে নিয়ে যেতে চলেছে। এছাড়া বলিউডের বেশিভাগ ফিল্ম ফ্লপ প্রমাণিত হচ্ছে, বলিউড খানদের লোকে বয়কট করছে, কপি কন্টেন্টের সুনামি শুরু হয়ে গেছে। এতো কিছুর পরও বলিউডের সেলিব্রিটিদের অহংকারের কোনো শেষ নেই। তবে জানিয়ে দি যে বলিউডের (Boycott Bollywood) ট্রেন্ডের শুরু হয় আমির খান (Aamir Khan) ও কারিনা কাপুরের (kareena kapoor Khan)একটি ভাইরাল মন্তব্যের কারণে।

বিষয়টি হলো আমির খান (Aamir Khan) কিছু বছর আগে বলেচিলেন যে ‘ তিনি ভারতে সুরক্ষিত অনুভব করছেন না’ এবং অন্যদিকে কারিনা কাপুর (Kareena Kapoor Khan) বলেছিল যে ‘যদি আমাদের স্টারকিডদের নিয়ে দর্শকদের এতো সমস্যা থেকে তাহলে দেখতে হবে না আমাদের ফিল্ম’। এই দুটি মন্তব্যের দর্শকরা রেগে যায় ও বয়কট করা শুরু করে। প্রথমে শুধু লাল সিং চাড্ডা ফিল্ম (Laal singh chadda) ও আমির-কারিনাকে মানুষ বয়কট করছিলো। আর এই বয়কটের ফলে লাল সিং চাড্ডা ফিল্মটি ফ্লপও প্রমাণিত হয়েছে বক্স অফিসে। ১৮০ কোটি টাকার বাজেটে তৈরি ফিল্ম ৫০ কোটি টাকা কামিয়েছে মাত্র। কিন্তু ধীরে ধীরে এই বয়কট বলিউডের যারা লাল সিং চাড্ডা ফিল্মকে সাপোর্ট করেছিল তাদেরকে ও গোটা বলিউডকেই ও নতুন বলিউডে যা ফিল্ম আসুক সেটাকেই বয়কট করতে শুরু করেছে দর্শকরা।

অন্যদিকে যেখানে এখন এমন পরিস্থিতি রয়েছে যে বলিউডে যেই ফিল্ম মুক্তি পাচ্ছে সেই ফিল্মকেই পাবলিক বয়কট করছে, এমন পরিস্থিতিতে বলিউডের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ও হাইপেড অভিনেত্রীয় আলিয়া ভাট (Alia bhatt) পায়ে নিজে কুড়ুল মেরেছে এবং অভিনেত্রী কারিনা কাপুরের সুরে গলা মিলিয়ে একই ভুল করে ফেলেছেন যেটি কারিনা কাপুর করেছিল। সম্প্রতি আলিয়া (Alia bhatt) তার ননোদ বা রণবীরের দিদি ও বলিউডের সুপারস্টার অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খানের সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন যে দর্শকদের যদি ইচ্ছা না হয় তবে আমার ফিল্ম দেখতে হবে না। অলিয়ার এমন মন্তব্য বলার পিছনে কারন ছিল যে জনগণ তাকে অত্যাধিক মাত্রায় স্টার কিড হওয়ার জন্য, নেপটিজামের জন্য ও বলিউড ফিল্ম হিসাবে বয়কট ও ট্রোল করছিল।

এছাড়া বয়কটের বিষয় বলিউডের অভিনেতা অর্জুন কাপুরও (Arjun Kapoor) নিজের মুখ খুলেছেন। যদিও বয়কট হোক বা না হোক অর্জুনের ফিল্ম তো বলিউডে এমনিও ফ্লপই প্রমাণিত হয়ে থাকে। হ্যাঁ তবে বয়কট নিয়ে মন্তব্য করায় অর্জুন কাপুর (Arjun Kapoor) সুযোগ খুঁজে পেয়েছে লাইমলাইটে আসার। বয়কট নিয়ে মন্তব্যের পর যথেষ্ট আলোচনায় রয়েছে তিনি। অর্জুন কাপুর বলেছেন  “এখন উত্তর দেওয়ার সময় এসেগেছে। দিন দিন বয়কট বলিউডের ট্রেন্ডের নাটক বৃদ্ধি পেতেই থাকছে। আর বলিউডের লোকেরা এই বিষয় চুপ থেকে ভুল করছে ও এই বিষয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। মানুষেরা বলিউডের লোকেদের শালীনতার সুযোগ নিচ্ছে। মানুষের মনে যা আসছে তারা আমাদের বিষয় যা খুশি বলে চলেছে। আমি ভেবেছিলাম আমাদের কাজ মানুষকে উত্তর দেবে এবং আমাদের নিজেদের হাটকে নোংরা করতে হবে না। কিন্তু এখন জিনিসগুলো লিমিটের বাইরে চলে যাচ্ছে। বয়কট সিস্টেম মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এবার আমাদের একসাথে মিলে আওয়াজ তুলতে হবে।”

এছাড়া বয়কটের বিষয় ও বলিউডের দুর্দশার বিষয় বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা, নির্মাতা, পরিচালক ফারহান আখতারও (Farhan Akhtar) মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন ” বলিউডকে এখন আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং গ্লোবাল অডিয়েন্সকে মাথায় রেখেও কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে।  ‘দ্য অ্যাভেঞ্জারস’-এর মতো আরও মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমাদের একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কোন ভাষায় কথা বলা হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়। আসল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কন্টেন্ট যার সাথে লোকেরা কানেক্ট করতে পারবে।

এছাড়া বলিউড গ্যাং মনে করে দেশের মানুষ তাদের ত্যাগ করে দিয়েছে ও বলিউড ফিল্ম গুলি ভারতে ফ্লপ প্রমাণিত হবেই। ফারহান আখতারের বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার যে দেশীয় ভ্রাতৃত্বের মাল হজম না হলে তারা বিদেশি ভ্রাতৃদ্বয়কে ঠুকবে ।কিন্তু এই মহাশয়কে বুঝতে হবে সম্মান আসে বাড়ি থেকে আর বাড়িতেই যখন পাত্তা পাওয়া যায়না তখন দুনিয়া থেকে দু-চারটা করতালি জোগাড় করে কেউ কী করবে? আর গ্লোবাল কানেকটিভিটির কথা বলতে গেলে চাটা এবং নমন করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং এই পার্থক্যটি ‘রৌদ্রম রণম রুধিরাম’ (RRR) খুব স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে।

এই চলচ্চিত্রটি না দেশকে অপমান করেছে, না দেশের সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছে এবং পরিস্থিতি এমন যে বিশ্বের বড় শিল্পী থেকে শুরু করে বৈশ্বিক সংস্থা এবং মিডিয়া পোর্টাল পর্যন্ত এই ফিল্মটির প্রশংসা করতে করতে  ক্লান্ত হচ্ছে না। কিন্তু বলিউড গ্যাং এখনও তার দাম্ভিকতা থেকে বিরত হচ্ছে না। বলিউডের রাজকুমারদের এই আচরণ নতুন কিছু নয়। তারা পরিবর্তন মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। যাঁরা একথা মেনে নিয়েছেন, তাঁরা খোলা মন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাগরে সাঁতার কাটতে প্রস্তুত, কিন্তু যাঁরা বিশ্বাস করেন না, তাঁদের অবস্থা মহাভারতের শিশুপালের মতোই হবে।