ফেসবুকে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশার পোস্ট! পাল্টা নেটিজনরা ধুয়ে দিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তীকে

বাংলা টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কাপল হলেন ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury) জুটি। এই দুই অভিনেত্রী ও অভিনেতা নিজেদের কাজের জন্য বরাবর বরাবর দর্শকদের মাঝে টপ অভিনেতা-অভিনেত্রীর তালিকায় ছিলেন। ঐন্দ্রিলা নিজের কেরিয়ারে সিরিয়াল, সিনেমা ও প্রচুর ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন ও সব্যসাচী প্রচুর সিরিয়ালে কাজ করেছেন। তার শেষ সিরিয়ালটি ছিল ‘মহাপিঠ তারাপীঠ’। এই সিরিয়ালে তিনি মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ বামাখ্যাপার ভূমিকা পালন করে সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন।

Sabyasachi Chowdhury and oindrila Sharma

ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর ভালোবাসার সম্পর্কটি অনেক পুরোনো। তার একসাথে অনেক সময় কাটিয়েছেন, খারাপ সময় একে অপরের পাশে থেকেছেন, কেরিয়ারের ভালো-খারাপ সময়ও একে অপরের পাশে থেকেছেন। এই জুটি একে অপরের খারাপ পরিস্থিতে পাশে থেকেছে ও তাদের ভালোবাসা শত কঠিন পরিস্থিতে শেষ হয়ে যায়নি বরং দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ভালোবাসা যে কতটা শক্ত তা প্রমান করে দিয়েছে এই জুটি সবাইকে। ঐন্দ্রিলা বর্তমানে একজন ক্যানসার (Cancer patients) আক্রান্ত রুগী। অভিনেত্রী দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথমবার ২০১৬ সালে ক্যানসারে (Cancer patients) আক্রন্ত হয়েছিলেন তিনি এবং ২০১৭ সালে জীবনের সাথে লড়াই করে পুরো সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসেন তিনি। সেই সময় তার জীবন-মরণ যাত্রায় প্রতিটি মুহূর্তে সব্যসাচী তার পাশে ছিল ও ঐন্দ্রিলাকে আগলে রেখেছিল।

Sabyasachi Chowdhury and oindrila Sharma

তারপর সুস্থ্য হয়ে যাওয়ার পর ঐন্দ্রিলা আবার এই রোগে আক্রান্ত হয় ২০২২ সালে কিংবা ২০২১-এর শেষে। আবার শুরু হয় চিকিৎসা ঐন্দ্রিলার। কেমোর পর কেমো চলতে থাকে অভিনেত্রীর। কিন্তু এইবার ঐন্দ্রিলার অবস্থা খুব শোচনীয়। কিছুদিন আগে কোমায় পর্যন্ত চলে গেছিলেন তিনি। ডাক্তার তাকে ভেন্টিলেশনে রেখেছিল। এখন যদিও কোমা থেকে ফিরে এসেছেন তিনি কিন্তু ঐন্দ্রিলার শরীর খুবই খারাপ। যেকোনো সময় ভালো-মন্দ ঘটে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তার প্রেমিক সব্যসাচী সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media post) ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে একটি পোস্ট করে এবং জনগণের কাছে অনুরোধ করে ঐন্দ্রিলার জন্য ভগবানের কাছে সুস্থতার প্রার্থনা করতে।

সব্যসাচী ফেসবুক পোস্টে লেখেন- “কোনওদিন এটা এখানে লিখবো ভাবিনি, আজ লিখলাম।
ঐন্দ্রিলার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করুন।
Pray for a miracle. Pray for supernatural.
She is fighting against all odds, beyond human.” সঙ্গে সঙ্গেই নেটমাধ্যমে ঐন্দ্রিলার দ্রুত আরোগ্য কামনায় একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তা আসতে থাকে। সব্যসাচী পোস্ট দেখে মনের কথা ব্যক্ত করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী-সহ অনেক সেলিব্রিটিরা। এখনো জনগণ তার জন্য প্রার্থনা করে চলেছে যাতে ক্যানসারজয়ী অভিনেত্রী তৃতীয়বার মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ফিরে আসতে পারেন।। নতুন আপডেট অনুযায়ী ব্রেন স্ট্রোকের পর বুধবার সকালে আবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।

Sabyasachi Chowdhury and oindrila Sharma

এমন পরিস্থিতিতে বাংলা টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তি কিছু এমন কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করে যার পরে তিনি জনগণের ট্রোলের স্বীকার হন। আসলে গত বুধবার ঋত্বিক চক্রবর্তী লেখেন যে “অনেকেই দেখি নানা কারণে ফেসবুকে প্রার্থনা করেন। কিন্তু, যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, তিনি ফেসবুক করেন তো?” এই মন্তব্য তিনি কেন করেছেন বা কাকে উদেশ্য করে করেছেন সেটা পরিষ্কারভাবে বোঝাননি তিনি কিন্তু জনগণ দুইয়ে দুইয়ে চার করে এটাই মেনে নিয়েছেন যে তিনি এই ঠাট্টার পোস্টটি ঐন্দ্রিলাকে উদ্দেশ্য করে করেছেন। ব্যাস তারপর আর কি গোটা নেট দুনিয়া তাকে বাজে ভাবে ট্রোল করতে শুরু করেছে ও তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে যে মৃত্যর সাথে লড়াই করা এক রুগীকে নিয়ে কী করে এমন মন্তব্য করলেন তিনি।

Ritwik chakraborty Facebook post about oindrila

 

একজন ইউজার ঋত্বিকের এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন “দাদা, ঐন্দ্রিলা আর সব্যসাচীকে নিয়ে এই ধরনের খোঁটা না মারলেই চলছিল না?” এরপর সুমনা চক্রবর্তী নামক একজন লিখেছেন “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু।” পিয়ালী সরকার নামক ইউজার লিখেছেন “বাহ, কি অসাধারণ হাস্যরসাত্মক পোস্ট! যদিও হাসি পেল না। এক কাজ করুন, এবার জোর করে কাতুকুতু দিয়ে হাসানোর চেষ্টা করুন। যদি তাতে কাজ হয়”। এরপর সায়ন্তী সেনগুপ্ত নামে এক মহিলা রেগে লিখেছেন “ঐন্দ্রিলার জন্যে প্রার্থনা করতে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে মানুষের বিশ্বাস কাজ করছে। ঐন্দ্রিলা ফেসবুক করলো কি না করলো কিছু যায় আসেনা। সকলেই ওর সুস্থতা প্রার্থনা করছে।”

জনগণের একটাই বক্তব্য অনেক কিছুই যুক্তিহীন বলে মনে হতে পারে। তবু যুক্তির বাইরেও কিছু আছে সেই বিশ্বাসেই হয়ত এসব করে থাকি আমরা। আর এত মানুষের প্রার্থনা এবং শুভেচ্ছার একটা ভালো দিক নিশ্চয়ই আছে। হয়তো এই কারণেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পর আবার সাড়া দিচ্ছেন ফাইটার ঐন্দ্রিলা।