সত্যিই এমন জুটি মেলা দায়! একেবারে বাস্তবের “রোমিও-জুলিয়েট” রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর প্রেমকাহিনী

আগেকার যুগের প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্ক গুলোকেই আসল ভালোবাসা বলে মনে করেন। কারণ সেই সময়ের ভালোবাসা গুলি এখনকার দিনের মতো লাভ/লোকসান দেখে হতো না, তখনকার দিনের ভালোবাসার সঙ্গী একটা গেলে আরেকটা পরিবর্তন হতো না, আগেকার দিনের ভালোবাসা গুলি এখনকার যুগের ভালোবাসার মতো খারাপ সময় ছেড়ে চলে যেত না। কিন্তু এখনকার দিনের ভালোবাসা কার সাথে থাকলে কত লাভে থাকা যাবে সেই বিচার করে হয়, একটা ছেড়ে চলে আরেকটা সঙ্গী পেতে মানুষের দুইদিনও সময় লাগে না এবং খারাপ সময় পাশে থাকা সে তো অনেক দূরের কথা। বলা যেতে পারে আজকালকার ভালোবাসা গুলো আর সেই আগেকার মতো নেই সব শুধু ব্যবসা। আর যারা সত্যি ভালোবাসে তাদের শুধু অবহেলা পেতে হয়। কিন্তু ১০০%-এর মধ্যে যখন ৯৯% লোক প্রমান করে যে ভালোবাসা আর আগের মত নিস্বার্থ ও পিওর নেই তখন কিছু ১% লোক প্রমান করে যে না আজও হয়তো সত্যিকারের ভালোবাসার অস্তিত্ব রয়েছে পৃথিবীতে। যেমন ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচী (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury)।
খুব অল্প সময়ের জন্য ঘর বেঁধেছিলেন
ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury) জুটি। আর অল্প সময়ের তাদের ভালোবাসা ইতিহাসে অমর হয়ে থেকে যাবে। সব্যসাচীর আদরের মিষ্টি ছিলেন ঐন্দ্রিলা। অর্থাৎ ভালোবেসে ঐন্দ্রিলাকে মিষ্টি নামে ডাকতেন সব্যসাচী। এই জুটির মধ্যে একে অপরের প্রতি কত ভালোবাসা রয়েছে তা একটি সাক্ষাৎকারের র্যাপিড ফায়ার বোঝা গেছিল। যখন সাংবাদিক ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর ইন্টারভিউ নিচ্ছিল তখন সব্যসাচীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে ‘ঐন্দ্রিলা বলতেই আপনার প্রথম কোন শব্দ মাথায় আসে?’ একগাল হাসি নিয়ে সব্যসাচীর উত্তর ছিল, “আমার।” আর আজ সব ব্যর্থ করে চিরকালের মত বিদায় নিলেন অভিনেত্রী। ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে সংসার করার যেসব স্বপ্ন দেখেছিলেন সব্যসাচী কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গতকাল চুরমার হয়ে গেছে ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর সাথে।
জানিয়ে দি ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর (Aindrila Sharma and Sabhyasachi Chowdhury) প্রেমটা কিন্তু লাভ এট ফার্স্ট সাইট ছিল না। জহুরীর চোখ নিয়ে রীতিমত যাচাই করেই রত্ন বেছেছিলেন অভিনেত্রী। দুই তারকার ফোনালাপ যে কবে প্রেমালাপে বদলে গেল তা বুঝতেই পারেনি কেউ। শুরু হয় একসাথে পথচলা। আর ঠিক তারপরেই ২০২১ সালে এই জুটির জীবনে এসেছিল নতুন ধাক্কা। ২০১৫ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ্য হয়ে গেছিলেন তিনি কিন্তু ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার আবার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সেই সময় ঐন্দ্রিলা জানতে পেরেছিলেন ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে টিউমার। এরপর চিকিৎসা চলে এবং দ্বিতীয়বারের মতো সম্পূর্ন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এই ক্যানসারের লড়াইয়ের সময় প্রতি মুহূর্তে সব্যসাচী তার পাশে ছিল।
এরপর ২০২২ সালে আবার কাজে নামেন ঐন্দ্রিলা এবং সব্যসাচীর সাথে প্রেম সম্পর্ক ভালো চলছিল তার। চলতি বছরে সব্যসাচী ও পরিবারের সাথে দুর্গা পূজা থেকে কালি পূজা খুব ভালো করে কাটিয়েছিল ঐন্দ্রিলা। এমনকি নিজের ৩১ শে আগস্ট নিজের ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে সব্যসাচীর সাথে ছবি পোস্ট করে ঐন্দ্রিলা লিখেছিলেন “আমার বেঁচে থাকার কারণ”। আর সব্যসাচীরও গোটা পৃথিবী ছিলেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু এই সুখ বেশিদিন টিকলো না এই জুটির ভাগ্যে। ছবি পোস্ট করার পরের দিন অর্থাৎ ১লা নভেম্বর হটাৎ ব্রেন স্ট্রোক হলো ঐন্দ্রিলার ও হসপিটালে ভর্তি করতে হলো তাকে। হসপিটালে ঐন্দ্রিলাকে ভর্তি করার পর খুব বড় মুখ করে সব্যসাচী বলেছিলেন ‘নিজে হাতে নিয়ে এসেছিলাম। নিজে হাতেই ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব।’ ডাক্তাররা হাল ছেড়ে দিলেও তিনি বিশ্বাস হারাননি। কিন্তু বিধাতা অন্য কিছুই চেয়েছিল। আর তাই গতকাল চিরদিনের মতো সব্যসাচীকে একা করে দিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে সব্যসাচীর ‘মিষ্টি অর্থাৎ ঐন্দ্রিলা।