বিদায়ের আগে পরীক্ষা দিতে কলেজে পৌঁছালো কনে, সহযোগিতা করলো বরযাত্রীরাও

শিক্ষার আলো সবার জীবনে থাকা অত্যন্ত জরুরি। যেই ব্যক্তির জীবনে শিক্ষার আলো নেই তার জীবন বৃথা হয়ে যায়। এমনকি কোনো দেশের উন্নতিও সেই দেশের মানুষের শিক্ষার উপর নির্ভর করে। যেই দেশের মানুষ যত বেশি শিক্ষিত সেই দেশ তত উন্নত। বিশেষ করে দেশের মহিলাদের শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়। কারণ মেয়েরাই একদিন গিয়ে মা হয় এবং সাধারণ একজন মা সন্তানকে শিক্ষার আলো দিতে সাহায্য করে এবং জীবনের ভালো মন্দ শেখায়। তাই একজন মহিলার শিক্ষিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আজকালকার মেয়েরাও যারা শিক্ষার গুরুত্ব বুঝছে তারা অনেক মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করছে এবং ছেলেদের সমান ভাবে টক্কর দিচ্ছে আর নিজের উন্নতির সাথে সাথে দেশের উন্নতিও করছে। আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে এক পড়াশোনায় মনোযোগী এক ছাত্রীর বিষয় আলোচনা করতে চলেছি যিনি তার বিয়ের পর শশুরবাড়ি যাওয়া পূর্বে এক্সাম হলে গিয়ে নিজের পরীক্ষা দেয় এবং তারপর নিজের স্বামীর বাড়িতে যায়। আসুন জেনেনি এই মেয়ের বিষয় সংক্ষেপে।

বি.এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রঞ্জনা, বৃহস্পটবার বিয়ের পর শশুরবাড়ি যাওয়ার পূর্বে বীরভূমের রাজকীয় মহা বিদ্যালয়তে পরীক্ষা দিতে পৌঁছায়। এই পরীক্ষাটি সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টো পর্যন্ত চলেছিল। পরীক্ষা চলাকালীন বরযাত্রীরা নতুন বউয়ের পরীক্ষা দিয়ে বেরোনোর অপেক্ষা করছিল। পরীক্ষা থেকে ফেরার পর রঞ্জনা বিদায়ের নিয়ম পালন করে শশুরবাড়ি যায়।

Ranjana new bride

সারারাত বিয়ে চলার পর সকাল হতেই নতুন বউ গেল পরীক্ষা দিতে

থানা খান্নার তিন্দুহি গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জনার বুধবার অর্থাৎ ১৫ জুন বিয়ে হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের নওগাঁওয়ের ছেলের সাথে হয়েছিল। ভারতের বেশিভাগ বিয়েই রাতে হয় এবং কোণের বিদায় সকালে হয়। রঞ্জনারও এমনটাই হয়েছিল। কিন্তু সকালে যখন ১০ টার সময় তার বিদায়ের তিথি পড়েছিল তখন রঞ্জনা তার মাতা-পিতার কাছে কলেজের পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। তার মাতা রুকমনি ও পিতা খুশালী তাকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরীক্ষা দেওয়া অনুমতিও দিয়েছিল তখন।

বরযাত্রী করছিল কোণের জন্য অপেক্ষা

বিয়ের ১২ ঘন্টাও পূর্ণ হয়েছিল না যখন রঞ্জনা বিদায়ের আগে পরীক্ষা দিতে গেছিল। আর তাই তার হাতের মেহেন্দির গন্ধ পর্যন্ত তাজা ছিল। বিয়ের সাজে অর্থাৎ বিয়ের লাল শাড়ি ও গয়না ইত্যাদি পরে নতুন বউয়ের মতো সেজেগুজেই হিন্দি সাহিত্যর দ্বিতীয় পেপার পরীক্ষা দিতে গেছিলেন রঞ্জনা। পরীক্ষা চলাকালীন বড় রাজেশ কুমার ও বরযাত্রীর লোকেরা নতুন বউয়ের পরীক্ষা দিয়ে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করে বসে ছিল।

Ranjana new bride

সুশীল বাবু যিনি বীরভূম কলেজের অধ্যক্ষ তিনি জানান যে মিশন শক্তি অভিযানের মাধ্যমে ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এর ফলস্বরূপ রঞ্জনার বিয়ের পর ও বিদায়ের ঠিক আগে পরীক্ষা দিতে আসা সত্যি প্রশংসনীয়। এছাড়া জানিয়ে দি রঞ্জনা এনএসএস-এর কার্যক্রমেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন। আর সত্যি রঞ্জনার এইরকম পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দিতে আসা সত্যি প্রশংসনীয়।