২৫ বছরের নিঃস্বার্থ সেবার পুরস্কার হিসাবে ৩ তলা বাড়ি সহ গোটা সম্পত্তি রিকশাচালক নামে লিখে দিল বৃদ্ধ মহিলা

আপন মানুষ হয় না আপন, দূরের মানুষ হয় আপন। এই কথাটি কম বেশি সব বেশি সবাই শুনেই থাকবেন। ৬৩ বছরের বৃদ্ধা মহিলার সাথে এমনি ঘটনা ঘটেছে। বৃদ্ধার স্বামী মারা যাওয়ার ৬ মাস পরে তাঁর এক মাত্র মেয়ে মারা গিয়েছিল। বৃদ্ধাকে নিঃসঙ্গতা ঘিরে ধরেছিল। কাছের পরিবার পরিজন তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। সেই সময় তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেন এক রিক্সাচালক।

ওড়িশার কটক জেলার বাসিন্দা বৃদ্ধা মিনাতি কুমার পট্টনায়ক । গতবছর তাঁর স্বামী কৃষ্ণ কুমার পট্টনায়ক মারা যান। এর ঠিক ৬ মাস পরে মেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আত্মীয়স্বজনরা দূরে যেতে শুরু করেন। কিন্তু ২৫ বছর ধরে মিনাতি দের দেখাশুনা করতেন রিকশাচালক বুদ্ধ সামাল। তিনি এবং তাঁর পরিবার বিনা স্বার্থে মিনাতির পাশে এসে দাঁড়ায়। তাঁকে সেবা শুশ্রূষা করে। এবার সেই বৃদ্ধা তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বুদ্ধ সামালের নামে করে দেবার সিদ্ধান্ত নেন।

গত ২৫ বছর ধরে ওই পরিবারের সাথে যুক্ত বুদ্ধ বাবু। তিনি মিনতির পরিবারের সদস্যদের রিকশা চড়াতেন। বুদ্ধ বাবু জানিয়েছেন, মিনতি ম্যাডাম খুবই ভালো মনের মানুষ। উনি আমাদের উৎসব এবং অন্যান্য দিনেও অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু গত বছর ওনার স্বামী এবং মেয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে উনি সম্পূর্ণ একা হয়ে যেতে থাকে। ওনার কাছের আত্মীয় স্বজনরা ওনার খোঁজও রাখতো না।
সেইসময় আমার আর আমার পরিবারের মনে হয়েছে ওনার পাশে দাঁড়ানো দরকার , তাই দাঁড়িয়েছি। উনি যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন আমরা ওনার যত্ন এবং খেয়াল রাখবো। উনার সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে দেওয়া তাঁর আভিজাত্য এবং মহত্ব।

তাঁর সমস্ত সম্পত্তির অনুমানুক মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। মিনতি দেবী জানিয়েছেন, ‘আমি আমার সমস্ত সম্পত্তি গরিব পরিবারকে দিতে চেয়েছিলাম। যাতে আমার মৃত্যুর পর আমার সম্পত্তি নিয়ে হয়রানি না হতে হয়। তাই আমি আমার সম্পত্তি বুদ্ধকে দিয়ে যেতে চায়। আমার বোন আমার সিদ্ধান্তএ রাজি নয়। কিন্তু যখন আমার সবথেকে বেশি দরকার ছিল তাঁদের । তখন আমার কাছের আত্মীয়দের কাছে পায়নি, তাঁরা আমাকে একবারও দেখতেও আসতো না এবং একটাও খোঁজ নিত না। সেইসময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন বুদ্ধ বাবু এবং তাঁর পরিবার। দিন-রাত আমার সেবা করেছে।’