১৫০ বছর পুরানো ঘড়ি- নেই কোনো সোলার সিস্টেম, তা সত্ত্বেও সূর্যকে কাজে লাগিয়ে বলে দেয় সঠিক সময়

অনেক কিছুই আমাদের দৃষ্টিতে রহস্যময় এবং বিস্ময়কর। যা দেখে আপনি বিজ্ঞানকেও মানতে চাইবেন না। বিহারের রোহতাস জেলার দেহরিতে ১৫০ বছরের পুরনো একটি চমৎকার ঘড়ি রয়েছে। এর টেকনোলজি খুবই অতুলনীয়, যেটিতে চাবি ঘোরানোর কোনো প্রয়োজন নেই এবং ব্যাটারি ভড়ারও কোনো ব্যাপার নেই। এতকিছু না করেও সঠিক সময় বলে দেয় এই অদ্ভুত ঘড়ি। সাসারামের কাছে রোহতাস জেলার ডেহরির আনিকুটে সেচ দফতরের ক্যাম্পাস এলাকায় এই দুর্দান্ত সূর্যঘড়ি তৈরি করা হয়েছিল। এই ঘড়িটি ১৮৭১ সালে এই জায়গায় স্থাপন করা হয়েছিল।

সন ক্যানেল সিস্টেম নির্মাণের সময় এখানে যান্ত্রিক কর্মশালায় শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের সময় দেখার জন্য ব্রিটিশ সরকার এই সানলাইট ওয়াচ তৈরি করেছিল। এখানে একটি সরকারি বোর্ডও বসানো হয়েছে, যেখানে লেখা আছে যে এই ঘড়িটি স্থাপিত হয়েছিল ১৫০ বছর আগে ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে। ব্রিটিশ সরকার এখানে সোন ক্যানেল সিস্টেম নির্মাণের কাজ শুরু করে। এরপর যান্ত্রিক কর্মশালায় কর্মরত শ্রমিকরাও সময় জানতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে সময় দেখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল এই সূর্যালোক ঘড়িটি।

খুব অবাক করা কথা এই ঘড়িটি আজও সঠিক সময় বলে দেয়। এর ভিতরে একটি পুরানো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, ঠিক এই প্ল্যাটফর্মে একটি সূর্যঘড়ি রয়েছে। এটির সাথে একটি ধাতব প্লেট সংযুক্ত রয়েছে। আপনি আজও রোমান ভাষায় পাথরের উপর লেখা হিসাবটি সহজেই পড়তে পারবেন। ঘড়িটি প্রতি আধ ঘন্টা সঠিক সময় দেখায়।

প্রাচীন ঘড়ি

সূর্যের রশ্মি উদয় থেকে অস্ত যাওয়ার সঠিক সময় পরিমাপ করে। ভৌগোলিক স্তরে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির সাথে এটি মিলে গেছে বলে জানা গেছে। আগে এই প্ল্যাটফর্ম এবং ঘড়িটি কেবল খোলা জায়গায় দেখা যেত, তারপর কয়েক বছর আগে এই রৌদ্রোজ্জ্বল ঘড়িটিকে ঘিরে একটি ছোট সীমানা তৈরি করা হয়েছে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো এখানে রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচ্ছন্নতার বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। এমতাবস্থায় এই এই ঘড়িটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই সূর্যঘড়ির প্ল্যাটফর্মটিতেও ফাটল দেখা দিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এটি দেখতে আসে। এখানে একটি পুরনো বোর্ড লাগানো আছে বলে জানা গেছে। লোকেরা এই বোর্ড দেখে তথ্য পায় যে এখানে একটি প্রাচীন সূর্য ঘড়ি রয়েছে। এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ ও রক্ষা করতে হবে।