ঠিক যেন সিনেমা, ১৪ বছর পর বাড়ি ফেরা নিখোঁজ ছেলে এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক

যখন আপন কারো সাথে কয়েক বছর পর দেখা হয়, তখন আনন্দের কোনো সীমা থাকে না। বিশেষ করে খুব কাছের কোন মানুষের সাথে দেখা হলে, আনন্দের ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে হারদোইয়ের সান্দি উন্নয়ন ব্লকের ফিরোজপুরে। এখানে একটি পরিবার থেকে ১৪ বছর আগে ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। ১৪ বছর পর আবার সেই ছেলেটি তাঁর পরিবারে ফিরে এসেছে। পুরো পরিবার আনন্দে মেতে উঠেছে। পরিবারে যেন উৎসবের মত পরিবেশ দেখা যাচ্ছে।

সাইতিপুরের মাজরা ফিরোজপুরের বাসিন্দা সরজুর পরিবারের কথা। সরজু হলেন একজন কৃষক এবং তাঁর স্ত্রী একজন গৃহিণী। আসলে, প্রায় ১৪ বছর আগে তাঁদের একটি ছেলে, যার নাম রিংকু, কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন। আসলে রিঙ্কু পড়াশোনা একদমই ভাল ছিলনা। তাই তাঁকে বাড়িতে একবার খুবই বকাবকি করা হয়। অভিমান বশত নতুন জামা কাপড় পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে, কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ওই পরিবারের আর্থিক অবস্থাও তো ভালো ছিল না। তাই শেষ পর্যন্ত তাঁরা ক্লান্ত হয়ে উঠেছিল। রিংকুর বাবা সবুজ ধরেই নিয়েছিলেন, তাঁর ছেলেকে আর পাওয়া যাবে না। একে ভাগ্যে লেখা বলে মেনে নিয়েছিল পুরো পরিবার।

রিংকুর ছোট বেলার নাম ছিল গুরুপ্রীত। বাড়ি ছেড়ে তিনি ট্রেনে উঠে লুধিয়ানাই পৌঁছেছিলেন। লুধিয়ানায় তাঁর একজন সর্দার জির সাথে দেখা হয়েছিল। তিনি তাঁকে সাহায্য করেছিলেন এবং তাঁকে একটি পরিবহন কোম্পানিতে নিয়োগ করেছিলেন। সেই পরিবহন সংস্থায় কাজ করার সময় রিঙ্কু ট্রাক চালানো শিখেছিলেন। সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেও কিছু ট্রাক কিনেছেন। আজ তাঁর কাছে একটি বিলাসবহুল গাড়িও রয়েছে।

গত শনিবার রাতে হঠাৎ করে রিঙ্কু তাঁর গ্রামে ফিরে আসে। তাঁর সবকিছু পাল্টে গেলেও তাঁর মা তাঁকে দেখে চিনে ফেলে। তাঁর ছেলেকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদতেও থাকে। রিংকুর বর্তমান বয়স ২৬ বছর। তিনি প্রায় সব কিছু ভুলে গেলেও তাঁর গ্রামের বসবাসকারী সুরত যাদবের কথা তাঁর মনে ছিল। তিনি সুরতের কাছে গেলে সুরাত তাকে তার পরিবারের কাছে নিয়ে যায়। রিঙ্কু গোরখপুরের একটি পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেছেন। যখন তাঁর বাবা-মা বিয়ের কথা জানতে পারে, তাঁরাও আনন্দে মেতে ওঠে।